• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

সরকার বা আওয়ামী লীগ ইলিয়াসকে গুম করে নাই : মির্জা আব্বাস

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল ২০২১

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার বিষয়ে নতুন তথ্য হাজির করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি ইলিয়াস আলীর ‘গুম’ হওয়ার পেছনে দলের ভেতরে থাকা কয়েকজন নেতার হাত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সরকার বা আওয়ামী লীগ ইলিয়াসকে গুম করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

শনিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় আব্বাস এ কথা বলেন। ঢাকায় সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মিলনীর উদ্যোগে দলের নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে এ আলোচনাসভা হয়। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী।

সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আজকে দুইটা দানবের হাতে আমরা পড়েছি। একটা দানব হচ্ছে এই সরকার, যারা আজ অন্য দেশের স্বার্থ হাসিল করছে। আরেকটা দানব হচ্ছে করোনাভাইরাস, এটা শুধু আমাদের কেন, গোটা বিশ্বকে আক্রান্ত করছে।’

আলোচনাসভায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যে ভূলুণ্ঠিত হতে যাচ্ছে এটার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো ইলিয়াস আলীর গুম। আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই। কিন্তু গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে আমি এটা জানতে চাই।’

ইলিয়াস আলীর গুম হওয়া প্রসঙ্গে দলের মহাসচিবের উদ্দেশে আব্বাস বলেন, ‘ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর মারাত্মক রকমের বাগবিতণ্ডা হয়। পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো এখনো আমার দলে রয়ে গেছে। যদি এদের দল থেকে বিতাড়িত না করেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই দল সামনে এগোতে পারবে না।’

ইলিয়াস আলীর গুমের খবর ওই দিন রাত দেড়টা থেকে পৌনে ২টার মধ্যে পেয়েছিলেন জানিয়ে আব্বাস বলেন, ‘গুমের সংবাদ পাওয়ার পর পরিচিত যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, ইলিয়াস আলীকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং, যে পুলিশ কর্তকর্তাদের সামনে তাঁকে নেওয়া হলো, সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পুলিশের গাড়িতে যে কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন, তাঁদের আজও পাওয়া যায়নি। যেমন ইলিয়াস আলীর চালককেও পাওয়া যায়নি। তাহলে এই কাজটা করল কে? একজন জলজ্যান্ত তাজা রাজনৈতিক নেতা গুম হয়ে গেল দেশের অভ্যন্তর থেকে। একজন নেতাকে দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেল, সালাউদ্দিনকে। চৌধুরী আলমকে গুম করে দেওয়া হলো। বুঝলাম, এই সরকার করে নাই। করল কারা? যারা করল, তাদের কি বিচার হতে পারে না? যারা করেছে, তারা এই দেশের স্বাধীনতা চায় নাই?’

মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিভাবে তার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হরণ করে নিয়ে, গণতন্ত্রবিহীন করে দিয়ে এখানে জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এ প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল ইলিয়াস আলীর মতো সাহসী নেতাকে। আমি বিশ্বাস করি, ইলিয়াস আলী যে প্রজন্ম থেকে এসেছিলেন সেই প্রজন্মের পরের প্রজন্ম যারা আসবে তারা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই নিখোঁজ হওয়া, গুম করে দেওয়ার ঘটনা ইলিয়াস আলীকে দিয়ে শুরু হয়েছে।’

ফখরুল অভিযোগ করেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত করে রাখাসহ ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সহসভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বিএনপির অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads