• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
সড়কে যানজট দোকানে ভিড়

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

সড়কে যানজট দোকানে ভিড়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০২১

কঠোর লকডাউনে টানা ১১ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার সারা দেশে খুলেছে দোকান ও শপিংমল। মার্কেট খুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই বদলে গেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও মার্কেটের চিত্র।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনে ব্যবসায়ী ও সরকারকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরতে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করছে সরকার। বিধিনিষেধ শিথিল করার পরই সারা দেশে সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়, যদিও এখনো সরকার গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়নি। এর মধ্যেও ব্যক্তিগত গাড়ি, কাভার্ড ভ্যান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও প্যাডেল রিকশার কারণেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট লেগে গেছে। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যানজটের ছবি দিয়েছেন। কেউ কেউ ছবির সঙ্গে বিদ্রুপাত্মক ক্যাপশনও জুড়ে দিয়েছেন।

মিজানুর রহমান নামের একজন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল রোববার দুপুরে তোলা রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার কয়েকটি ছবি দিয়ে লেখেন, প্রচুর লকডাউন চলছে...।  তার ওই ছবিতে দেখা যায়, কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই, অনেকের মুখে মাস্ক নেই, গাদাগাদি করে মার্কেটে ও সড়কে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজধানী ও বিভিন্ন জেলা শহরের নানা সড়কের এমন অসংখ্য ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। ছবিগুলোতে সড়কে যানবাহনের রীতিমতো ভিড় দেখা যাচ্ছে। লোকজনও স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছেন।

রাজধানীর সড়কগুলোতে এখনো বাস চলাচল শুরু না হলেও ব্যক্তিমালিকানার গাড়ি, সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং রিকশা অবাধে চলছে। শুরু হয়েছে পূর্বের চিরচেনা সেই যানজট। এ যেন লকডাউন ভাঙার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন রাজধানীবাসী। কোনো কোনো এলাকায় সড়কে যানজটে দীর্ঘসময় অপেক্ষার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিন গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, পান্থপথ, নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও রিকশায় পূর্ণ সড়ক।

আগারগাঁও থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত এসব যানবাহনের দীর্ঘ সারি। একদিকে ফার্মগেট থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত যানজট দেখা গেছে। অন্যদিকে এই যানজট ফার্মগেট থেকে কারওয়ানবাজার হয়ে পান্থপথ এলাকা পর্যন্ত ছুঁয়েছে। গণপরিবহন না থাকায় একদিকে যেমন পরিবহন সংকটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের, অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও।

ফার্মগেটে জাহাঙ্গীর নামে এক সিএনজিচালক বলেন, লকডাউনের মধ্যে এত যানজট ছিল না। আজকে মার্কেট খোলা তো, তাই যানজট বেশি। তিনি আরো বলেন, আগারগাঁও থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী অফিস, ফার্মেগেট, কাওরানবাজার পুরোটাই জ্যাম।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে সরকার গতকাল থেকে মার্কেট খুলে দিয়েছে। সকালে নিউমার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলো খোলা শুরু হয়েছে। যারা খুলেছেন, তারা ঝাড়ামোছার কাজ করছেন। এরই মধ্যে কোনো ক্রেতা এলে সেটাও সামলাচ্ছেন কেউ কেউ।

গুলিস্তান এলাকা ফিরে গেছে তার পুরোনো রূপে। ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। গুলিস্তান মোড়ে যান চলাচল বেড়েছে। পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডে মানুষের ভিড় বেড়েছে অনেক। দোকানপাটও খোলা রয়েছে।

নিউমার্কেটে আকরাম হোসেন নামে দোকানের এক মালিক বলেন, রোজার মধ্যে এসে দোকান খুলেছি। কতটা ব্যবসা করতে পারব জানি না। কারণ এখন অনেক গরম। বিকেল পাঁচটায় বন্ধ করতে হবে। ইফতারের পরেই আসলে মানুষ বেশি আসে। তারপরও কিছু বেচাবিক্রি হয়তো হবে।

তিনি আরো বলেন, গণপরিবহন বন্ধ। কাছের মানুষ যারা, তারাই আসবে। দূরের ক্রেতারা আসতে পারবে না। বাস চলাচল শুরু হলে হয়তো বেচাবিক্রি বাড়বে।

এদিকে রাজধানীর কিছু চেকপোস্টগুলোয় ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও তল্লাশি করা হচ্ছে না মুভমেন্ট পাস। কে জরুরি কাজে আর কে অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে না। তবে কিছু জায়গায় রিকশাওয়ালাদের হয়রানি করতে দেখা গেছে সড়কে দায়িত্বরতদের।

পুলিশ সদস্যরা বলছেন, আজ (গতকাল) থেকে সব দোকানপাট, শপিংমল এবং মার্কেট খোলার কারণে রাজধানীর সব সড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ বেড়েছে। গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি না দেওয়ায় সিএনজি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারে মার্কেট, কর্মস্থল ও প্রয়োজনীয় কাজে যাচ্ছেন মানুষ। এ কারণে একসঙ্গে সবাইকে মুভমেন্ট পাস আছে কি না কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সড়কে বেশিরভাগ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে লক্ষ করা গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads