জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, করোনা সংক্রমণ কমাতে ঈদের আগে আরেক দফা বিধি-নিষেধ বা লকডাউন বাড়তে পারে। এবার একই সঙ্গে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। তবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আসতে পারে যে কোনো সিদ্ধান্ত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবশেষ এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আগামী ৫ মে পর্যন্ত বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা না কমলে বিধি-নিষেধ বাড়াতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশ ও আমাদের দেশের কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মৃত্যু এবং সংক্রমণ কমানো জরুরি। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিই রাখতে হবে।
আগামী ৫ মে পর্যন্ত বিদ্যমান লকডাউন শেষে ঈদের আগে ৬ মে (বৃহস্পতিবার), ৯ মে (রোববার) ও ১১ মে (মঙ্গলবার)-এই তিন কর্মদিবস পাওয়া যাবে। ৭ ও ৮ মে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১০ মে শবে কদরের সরকারি ছুটি পড়েছে। ঈদ হতে পারে ১৩ বা ১৪ মে। এ পরিস্থিতিতে আরো বিধি-নিষেধ আসতে পারে কিনা-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে আছি। আগামী দিনগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিধি-নিষেধগুলো মানানো হবে। পরিস্থিতি আমরা সব সময় পর্যবেক্ষণে রাখছি। সে অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা থাকবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে জীবন আগে, জীবন বাঁচানোর জন্য প্রন্তুত থাকতে হবে। সে জন্যই চলমান কঠোর লকডাউন ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, বাজার কমিটি বা ব্যবস্থাপনায় যারা রয়েছে তারা মনিটরিং করবে। স্বাস্থ্যবিধি যাতে শতভাগ প্রতিপালন করা হয়, সেটি তারা দেখবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হলে, সরকার আইন প্রয়োগ করবে। আগে জারি করা বিধিনিষেধগুলো কার্যকর থাকবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের প্রবেশপথে স্থল, নৌ ও বিমানে যারা আসবেন, সেখানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিরা ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অনুমতি বা অনাপত্তি ছাড়পত্র গ্রহণ সাপেক্ষে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন।
অফিস-আদালত বন্ধের যে বিধিনিষেধ, রেস্টুরেন্টে বিধিনিষেধ সেগুলো কিন্তু বলবৎ থাকবে। অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে আসার ওপর যে বিধিনিষেধ ছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ডাবল মাস্ক পরা, নো মাস্ক নো সার্ভিস- ওই কথাটা, এগুলো সবাই যেন খুব জোরালোভাবে প্রতিপালন করে। পরিস্থিতি উত্তরণে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা একটা বিশেষ অবস্থার মধ্যে আছি সামনের দিনগুলোতে আমাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে এই পরিস্থিতিটা আমরা মোকাবিলা করতে পারি।
লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরাও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। দোকানপাট খোলা রাখায় তাদের পক্ষে গণপরিবহন চালুর দাবি উঠেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার লকডাউন বাড়ানো হলেও গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু রাখা হতে পারে। তবে ৫ তারিখের পর বিধিনিষেধের কী হবে সেটা এখনো চিন্তা-ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে। আমরা ৫ তারিখের আগেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।