ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে প্রতিদিন খাদ্য সহায়তা চেয়ে হাজার হাজার ফোন আসছে। গত ২৫ এপ্রিলের পর থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত খাবার ও ত্রাণের জন্য জাতীয় হেল্পলাইনে মোট ৩ লাখ ফোন কল এসেছে। প্রতিদিনই ফোন কলের সংখ্যা বাড়ছে।
সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, কোনো মধ্যবিত্ত পরিবার যদি খাদ্য সংকটে থাকেন তবে ৩৩৩ নম্বরে কল দিলে তার বাসায় খাবার পৌঁছে যাবে। এই ঘোষণা পর থেকেই মূলত ফোন কলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩৩৩ সূত্র জানায়, এসব ফোনকল যাচাই-বাছাই করে গত ২৫ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ২ হাজার ৫৭৭টি পরিবারকে খাবার পাঠানো হয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল থেকে চলতি ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিন বছরে ৩৩৩ নম্বরে প্রায় ৩ কোটি ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে।
মোট ফোনকলের মধ্যে সম্প্রতি ৫০ লাখের বেশি কল এসেছে শুধু করোনা বিষয়ক। স্বেচ্ছাসেবী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে টেলি মেডিসিন সেবা দেওয়া হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ নাগরিককে।
এ ছাড়া ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে ত্রাণ সাহায্য চেয়ে কল এসেছে ১৮ লাখের বেশি।
এদিকে খাদ্য সহায়তা চেয়ে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এও পাঁচশতাধিক ফোন কল এসেছে। ৯৯৯ জানায়, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রথম দফায় ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। পরে সেটি দুদিন বাড়ানো হয়। এ দফায় ভালো ফল না আসায় ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। সেটিও দফায় দফায় বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। লকডাউনের পুরোটা সময়জুড়েই ৯৯৯-এ ঘুরে ফিরে ৪-৫ ধরনের কলই আসতে থাকে।
সেগুলো হচ্ছে, খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করুন, ত্রাণ সহায়তা পাঠান, ত্রাণ কোথায় পাওয়া যাবে, সরকারের দেওয়া নগদ ২৫০০ টাকা কারা পাবে, এনজিও-ব্যাংক ঋণ, ক্রেডিট কার্ডের ঋণ মওকুফ হচ্ছে কি না, বাড়ি ভাড়া মওকুফ হচ্ছে কি না ইত্যাদি। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে ফোনের সংখ্যাও বেড়েছে।
জরুরি সেবা জানায়, ৫ এপ্রিল সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণার আগে ৯৯৯-এ দৈনিক ২২ হাজার ফোন কল আসত। বর্তমান সময়ে এই কলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজারে।
জাতীয় জরুরি সেবার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আনোয়ার সাত্তার বলেন, জরুরি মুহূর্তে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস বা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দিলে সেগুলোর রেকর্ড রাখা আমাদের মূল কাজ। তবে ইদানীং ত্রাণ সহায়তা চেয়ে অনেক কল আসছে। তাদের আমরা জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে ফোন করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি মওকুফের তথ্য জানতে চেয়ে অনেকে ফোন করেন। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা না থাকার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
