• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
সাংবাদিক রোজিনার জামিন আদেশ কাল

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

নিঃশর্ত মুক্তির দাবি বিশিষ্ট নাগরিকদের

সাংবাদিক রোজিনার জামিন আদেশ কাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ মে ২০২১

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় জামিন আদেশ আগামীকাল রোববার। তাকে জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এছাড়া মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনার জামিন আবেদনের শুনানি হলেও আদেশ হয়নি। আদালত আদেশের দিন ধার্য করেছেন আগামীকাল রোববার। রোজিনা এখন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে।

রোজিনা ইসলামের জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা সরকারের কাছে অবিলম্বে এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার, রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার ওপর নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনারও জোর দাবি করছি। বিবৃতিতে বলা হয়, নাগরিক সমাজসহ সবাই আশা করেছিল যে ‘ঘটনার সংবেদনশীলতা, নাগরিকের জামিন পাওয়ার অধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে দৃঢ়তা প্রদর্শন করে’ বৃহস্পতিবারই তার জামিন মঞ্জুর হবে। কিন্তু জামিন আদেশের দিন রোববার ধার্য করা হয়। ‘রোজিনাকে জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আদালতের এই বিলম্ব আমাদের যারপরনাই হতাশ এবং ক্ষুব্ধ করেছে।’ রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলার ধারাগুলোর প্রতিটি জামিনযোগ্য উল্লেখ করে নাগরিকেরা বলেন, জামিন পেলে এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে কোনো রকমের জটিলতা সৃষ্টি হতো না।

রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও বেআইনি গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) চত্বরে এক প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা এতে অংশ নেন।  ওই কর্মসূচিতে রোজিনা ইসলামের জামিন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রোজিনা কলম ধরেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সবাই জানতে চায়। দুর্নীতিবাজদের গুন্ডামিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বন্ধ হবে তা মানা যায় না। রোজিনার জামিন এবং মামলা প্রত্যাহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। রোজিনার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন তারা।

ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেন, নির্যাতনের শিকার যখন অচেতন হয়ে পড়ে গিয়েছেন, তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। সচিবালয়ে তাকে আটকে রাখা অবস্থায় আমরা কিছু করতে পারিনি, তখন আমরা অসহায় ছিলাম।

সাংবাদিক রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, জামিন শুনানি শেষে রোববার আদালত আদেশ দেবেন। যদি সেদিন তাকে মুক্তি না দেওয়া হয় তাহলে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি চলবে। রোজিনা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে এখন জেলে। তাকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

সাংবাদিক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তারা সচিবালয়ে মাস্তানি করবেন এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করায় রোজিনা ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম গত সোমবার সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন সেখানকার কর্মকর্তারা। ওই সময় তাকে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। রাতে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। তার মুক্তির দাবিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads