• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
ঢিলেঢালা চলছে লকডাউন

ফাইল ছবি

জাতীয়

ঢিলেঢালা চলছে লকডাউন

  • মোহসিন কবির
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই ২০২১

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলছে কঠোর লকডাউন। কিন্তু এই লকডাউনেও সরকারি বিধিনিষেধ মানছে না অধিকাংশ মানুষ। তাই গতকাল পঞ্চম দিনেও রাজধানীর সড়কে দেখা গেছে আগের দিনের চেয়ে বেশি যানবাহন ও মানুষের চলাচল। অনেকটা ঢিলেঢালা ভাবেই চলে লকডাউন। এদিন করোনায় সর্বোচ্চ ২৫৮ জন মৃত্যুর খবরেও সতর্ক হয়নি নগরবাসী।

রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে রিকশার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যানবাহন ও পণ্যবাহী যান চলাচল আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অলিগলির চায়ের দোকান আর মোড়ে মোড়ে আড্ডা দিতে দেখা যায় তরুণ-যুবকদের।

এদিকে কোরবানির ঈদের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও  এখনো হাজারো মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন রাজধানীতে। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে বা ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে রাজধানীতে প্রবেশ করছেন তারা। যাদের বেশিরভাগই জীবন ও জীবিকার তাগিদসহ নানা কারণে লকডাউন উপেক্ষা করে  রাজধানীতে আসছেন বলে জানান।

অন্যদিকে গতকাল রাজধানীতে গণপরিবহন ছাড়া প্রায় সব ধরনের গাড়িই বিভিন্ন সড়কে চলতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন পুলিশ চেকপোস্টে কড়াকড়ি দেখা গেলেও এদিন দেখা গেছে উল্টো চিত্র। কোনো কোনো সড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপও দেখা গেছে। কিন্তু আগে যেসব এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল গতকাল সেসবের বেশিরভাগই দেখা যায়নি। আবার কিছু মোড়ে চেকপোস্ট থাকলেও পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এ বিষয়ে রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. রেফাতুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। কিন্তু মানুষ নানা অজুহাত দিয়ে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও সবারই জরুরি কাজের অজুহাত দিচ্ছে। সকালে অফিস টাইমে গাড়ির চাপ কিছুটা বেশি থাকে। এরপর ধীরে ধীরে চাপ কমতে থাকে। আবার বিকেলের দিকে অফিস ছুটি হলে চাপ কিছুটা বাড়ে।’

পঞ্চম দিনে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া কিংবা নির্দেশনা অমান্য করায় ৫৫৫ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২৩৬ জনকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করা হয়। সেইসাথে ৪৯৭ টি গাড়িকে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, এ দফায় কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে ডিএমপির ৮টি বিভাগে বিভিন্ন থানা পুলিশ একযোগে অভিযান চালায়। বিধিনিষেধ অমান্য করে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে সারাদিনে ৫৫৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৩৬ জনকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অন্যদিকে বিধিনিষেধের মধ্যে ফেরিতে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে মানা হচ্ছে না এই নিয়ম। এই রুটের প্রতিটি ফেরিতেই শত শত যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়িকে পদ্মা পারি দিতে দেখা গেছে। যদিও ফেরিতে যাত্রী চলাচল নিয়ন্ত্রণে ঘাটের অভিমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তবে তা অতিক্রম করতে যাত্রীরা প্রয়োজনের কথা তুলে ধরছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে। এতে তারাও বাধ্য হচ্ছেন ছাড় দিতে।

সরেজমিন ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। প্রতিটি ফেরিতেই শতশত ঢাকামুখী যাত্রী। আছে মোটরসাইকেলের ঢলও। আবার শিমুলিয়া হয়ে বাংলাবাজার যাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীরা। তবে ফেরিতে দক্ষিণবঙ্গগামী যাত্রীদের চেয়ে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় বেশি। এতে ফেরিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব; উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধিও।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads