• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

‘গ্যাসক্ষেত্রগুলোর গভীর স্তরে অনুসন্ধান জরুরি’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ আগস্ট ২০২১

বাংলাদেশের আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর আরো গভীরে অনুসন্ধান করলে বেশ ভালো পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। হঠাৎ যদি বর্তমান গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাসের পরিমাণ কমে যায় তাহলে শুধু এলএনজি দিয়ে এক ঘাটতি পূরণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে অনেক গ্যাসক্ষেত্রের গভীরে হাই প্রেসার জোন পাওয়া গেলেও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা এই পরামর্শ দেন।

প্রধান অতিথি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, এখনো দেশে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে এটা অনেক আশার কথা। তবে কী পরিমাণ পাওয়া যাবে সেটার অনিশ্চয়তা আছে। এদিকে ক্রমান্বয়ে গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন কমছে। হঠাৎ  করে ৩০০-৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কমে যেতে পারে। আর হুট করে কমে গেলে সেটা মেটানো খুব কঠিন হবে। শুধু এলএনজি আমদানি করে এই ঘাটতি পূরণ করা যাবে না। আশা করি সেই পরিস্থিতি হবে না। যদি হয় তাহলে মহাবিপদে পড়বে দেশ। বাপেক্স যদি সরকারি নির্দেশনায় বসে থাকে তাহলে চলবে না। এইভাবে কাজ করলে কাজ হয় না। অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় যেটা বাপেক্স নিতে পারছে না। এতে কাজের গতিও কমে আসছে।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মর্তুজা আহমেদ ফারুক। তিনি বলেন, আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে তিতাসের মতো বড় গ্যাসক্ষেত্র যেমন আছে তেমনই ফেঞ্চুগঞ্জ, পাথারিয়া, আটগ্রাম, সীতাকুণ্ড, সুনেত্র, মোবারকপুর, শ্রীকাইল, পটিয়া, কাসালং’র মতো গ্যাসের অবকাঠামো আছে এমন জায়গায়ও অনুসন্ধান শুরু করা দরকার এখনই।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, সরকারি কোম্পানি বাপেক্সের একার পক্ষে এসব কাজ করা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে অন্য বিদেশি অভিজ্ঞ কোম্পানি অথবা প্রবাসী বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগিয়ে কাজ করানো সম্ভব। দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে বাপেক্সকে ফুল অথরিটি দেওয়া, বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতে দেওয়া ও প্রবাসী অভিজ্ঞদের কাজ লাগানো উচিত। সবার আগে আমাদের মাইন্ড সেটআপ চেঞ্জ করতে হবে। সংকট কাটাতে হলে রিয়েল এক্সপার্টদের কাজে লাগাতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, দেশের বেশ কিছু গ্যাসব্লকে ডিপ ড্রিলিং করে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পার্বত্য এলাকাসমূহে এ সম্ভাবনা আছে। তিতাস, বাখরাবাদ, শ্রীকাইল, শাহবাজপুর, রশিদপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় এই খনন এখন সময়ের দাবি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, দেশের অনেক আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রে আমরা হাই প্রেসার জোন পেয়েছি। প্রেসারের কারণে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এইসব হাই প্রেসার জোনে কী পরিমাণ গ্যাস আছে তা কিন্তু প্রমাণিত নয়। তাই আমাদের ড্রিপ ড্রিলিংয়ে যাবার আগে সেখানে কী পরিমাণ গ্যাদ আছে সে তথ্যগুলো কালেক্ট করে একটি ডাটা বেইজ করে মডেলিং করা যেতে পারে। আমরা এখনো আশাবাদী, অনেক এলাকায় গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। একদিন এই গ্যাস আবিষ্কার হবে এবং আমাদের গ্যাস সংকট কেটে যাবে বলে আমরা আশা করছি। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ডিপ জোনে কাজ করতে হলে যে তথ্য প্রয়োজন তা সবার আগে সংগ্রহ করে, তার ভিত্তিতে গভীর স্তরে কাজের সুযোগ রয়েছে আমাদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads