• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সংক্ষিপ্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০২১

অটোপাশের অপবাদ ঘোচাতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি চলতি বছরের এসএসসি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রও প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে যেহেতু এবার নৈর্বচনিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে, তাই কেন্দ্রসংখ্যা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

করোনাভাইরাসের কারণে আটকে থাকা চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা বিকল্প উপায়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, উভয় ক্ষেত্রেই গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ে ছয়টি সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বাছাইয়েরও সুযোগ বাড়ছে। এছাড়া আগে যেখানে ১০টি প্রশ্নের মধ্যে ৭-৮টির উত্তর দিতে হতো এবার সেখানে দিতে হবে চারটি।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, যেভাবেই হোক আমরা পরীক্ষা নিতে চাই, যাতে পরীক্ষার্থীদের কেউ অটোপাশের অপবাদ না দিতে পারে। ইতোমধ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। এইচএসসি ফরম পূরণের কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি, নভেম্বরে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসবে। ফলে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে পারব।

শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার যেহেতু নৈর্বচনিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে, তাই কেন্দ্রসংখ্যা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আবশ্যিক বিষয় থাকলে যে কেন্দ্রে ৫০০ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হতো, আবশ্যিক বিষয় না থাকায় সেই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হবে বড়জোড় ১০০ জন। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে কোনো সমস্যা হবে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার এইচএসসিতে যদি কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বচনিক বিষয় পদার্থ, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত থাকে, তাহলে তাকে এই তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে পরীক্ষা দিতে হবে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়। রচনামূলক অংশে নম্বর থাকবে ৩৫ ও এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েজ কোয়েশ্চেন) থাকবে ১৫ নম্বরের। আর প্রতি বিষয়ে মোট নম্বর ১০০ নম্বরের বদলে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। তবে ৫০ নম্বরকে ১০০তে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হবে।

এবার এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রেই গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ে ছয়টি সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে অন্যান্য বিষয়ে যেমন আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম এবং চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এসব বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফল মূল্যায়ন করা হবে। এসএসসিতে (ভোকেশনাল) জেএসসি ও নবম শ্রেণি এবং এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) এসএসসি ও একাদশের ফল মূল্যায়ন করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। অন্যদিকে টিকা নেওয়ার হারও বেড়েছে। পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন এমন শিক্ষক-কর্মকর্তারা প্রায় সবাই টিকার আওতায় এসেছে। তাই ছোট পরিসরে হলেও পরীক্ষাটা নিতে চাই, কারণ এতে কম করেও হলেও মেধার মূল্যায়ন হবে।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এইচএসসির কোনো শিক্ষার্থীর বায়োলজি চতুর্থ বিষয়, অথচ এসএসসিতে কৃষিশিক্ষা ছিল তার চতুর্থ বিষয়। ওই শিক্ষার্থী এসএসসির চতুর্থ বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসির চতুর্থ বিষয় বায়োলজিতেও তাকে একই নম্বর দেওয়া হবে। ওটা তার বায়োলজির নম্বর হিসেবে যুক্ত হবে। তার মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব জায়গায়ই ওই নম্বরই গ্রহণযোগ্য হবে। আবশ্যিক বিষয়গুলোতেও একইভাবে নম্বর দেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় শতভাগ শিক্ষক-কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। গত সপ্তাহের হিসাব অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পযায়ে ৯০ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকার আওতায় এসেছে। বাকি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের টিকা দেওয়া জন্য চলতি মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত শিক্ষার্থী মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ জন। প্রথম ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬ হাজার ৭২ জন। ৩৪ হাজার জনেরও বেশি শিক্ষক নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে ৩০ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে আছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী। এদের বেশিরভাগ কর্মজীবী ও প্রায় সবার বয়স ১৮ বছরের বেশি। বেশিরভাগই নিজস্ব উদ্যোগে নিবন্ধন করে টিকা নিয়েছেন। প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের শিক্ষার্থীদের স্থানীয়ভাবে নিবন্ধন করে টিকা নেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads