• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

পানিবন্দি কয়েকশ পরিবার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৭ আগস্ট ২০২১

টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে দুই জেলার নদীর চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল এবং অভ্যন্তরীণ নদী-তীরবর্তী এলাকার শত শত পরিবার এখন পানিবন্দি। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিও।

টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুদিন স্থিতিশীল থাকার পর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে যমুনার পানি বেড়েছে। জেলায় যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে অভ্যন্তরীণ ধলেশ্বরী, লৌহজং, বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানিও বেড়েছে।

সূত্র জানায়, ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পানি এভাবে বাড়তে থাকলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগ। কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, ভৈরববাড়ী গ্রামে পানি ওঠায় প্রায় দেড়শ পরিবার এখন গৃহহীন। তারা আশ্রয় নিয়েছে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়।  এখন ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামই পানিতে তলিয়েছে। টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসানুল বাসার বলেন, ক্ষেতে পানি প্রবেশ করায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হেক্টর আমন বন্যায় তলিয়েছে।

সিরাজগঞ্জে এক দিনে যমুনার পানি ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে গতকাল সকালে এই রিডিং রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানিতে তলিয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। সেখানকার রাস্তাঘাটে পানি প্রবেশ করায় ব্যাহত হচ্ছে যাতায়াত। জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, যমুনার পানিতে ডুবেছে নিম্নাঞ্চলের রোপা আমন ধানক্ষেত। গো-চারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার গো-খামারিরা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন  জানান, যমুনায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও তেমন কোনো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও কোনো খারাপ পরিস্থিতির খবর নেই। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে। প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী সেগুলো বিতরণ করা হবে।

এদিকে ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি আবার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্য নদনদীর পানিও। এতে করে ধরলাসহ অন্য নদনদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সব নদনদীর বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে ভাঙন। এছাড়া মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বেকায়দায় পড়েছেন দিনমজুরসহ নদীপাড়ের মানুষ।

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত থেমে থেমে থাকার শঙ্কা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, দ্বিতীয় দফায় নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads