করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে এর মধ্যেই বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের করোনা সংক্রমণের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এসব খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
শনিবার ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “সোশাল মিডিয়ায় আমি দেখছি, প্রায়ই আমাকে লিখে পাঠাচ্ছে যে এই স্কুলে এতজন শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত, ওই স্কুলে এতজন আক্রান্ত। আমরা প্রতিটি জায়গায় সাথে সাথেই অনুসন্ধান করছি। তবে আশার বিষয় হচ্ছে যে শিক্ষার্থীরা সোশাল মিডিয়াতে লিখছে এখানে আক্রান্ত ওখানে আক্রান্ত, আমরা এখন পর্যন্ত কোথাও সত্যতা কিন্তু পাইনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের এখন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেখানে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের কথা শোনা যাচ্ছে। সেগুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, তারা সেগুলোর ব্যাপারে দেখছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”
গত বুধবার করোনারভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে মানিকগঞ্জের এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর আসে গণমাধ্যমে। ওই শিক্ষার্থী ১৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ স্কুলে এসেছিল। তখন তার শরীরে কোনো সমস্যা ছিল না। এর বাইরেও বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ওই শিক্ষার্থী শুধু ১৫ সেপ্টেম্বর একবার স্কুলে এসেছিল, এর প্রায় ৭ দিন পর তার করোনা শনাক্তের খবর পাওয়া যায় এবং সে মৃত্যুবরণ করে।
তিনি বলেন, আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি বলেছেন, ও একদিনই স্কুলে এসেছিল। তখন তার কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না। যে কারণে সেখানে সকলের আর পরীক্ষা করবার প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগ আসা মাত্রই বা কোনো তথ্য পাওয়া মাত্র আমরা স্থানীয় প্রশাসন, সিভিল সার্জনের অফিস, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় আমরা সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”
পরিস্থিতি ফের নাজুক হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেবেন না বলে দীপু মনি জানান।
“আগেই বলেছি, কোথাও যদি মনে করি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি প্রয়োজন হয় বন্ধ করে দেব। কোনো দ্বিধা করব না। এখন পর্যন্ত কোথাও সেরকম পরিস্থিতি তেমনভাবে হয়নি। তবে যদি কোথাও হয়, নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা নেব।”
সংক্রমণ এড়াতে সবার সচেতন থাকার উপর জোর দেন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদিও (সংক্রমণ হার) শতকরা ৫ এর নিচে নেমে এসেছে, তারপরও কিন্তু অতিমারি চলমান সারাবিশ্বেই। কাজেই আমাদের তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। কেউ না কেউ অসুস্থ হতেই পারে, বাড়িতেও অসুস্থ হতে পারে, যাতায়াতের পথে অসুস্থ হতে পারে। এমনকি তাদেরকে দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সংক্রমণ ঘটতে পারে, সেটি যেন না ঘটে।”
শিক্ষামন্ত্রী জানান, মধ্য নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
প্রাক প্রাথমিকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “প্রাক প্রাথমিকের বাচ্চাদের এই মুহুর্তে আনতে চাচ্ছি না।”
তাদের সপ্তাহে এক দিন আনা হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “না, একদমই না। এই মুহূর্তে না। তারা এখন বাড়িতে থাকুক। আমরা আবার সিদ্ধান্ত নেব। তিন সপ্তাহ পার হোক তারপর আবার সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।”