• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
অজানা রহস্যে বন্ধ করোনা পরীক্ষা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন

অজানা রহস্যে বন্ধ করোনা পরীক্ষা

  • মোহসিন কবির
  • প্রকাশিত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

করোনার প্রকোপের কারণে টানা প্রায় ৩ মাস বন্ধ ছিল বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্লাইট। গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ ৬ দেশের যাত্রীদের ট্রানজিট সুবিধা চালু করে দেশটি। তবে শর্ত দেওয়া হয়, ফ্লাইট ছাড়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দরে র‍্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। আমিরাতের এই শর্ত মেনে মাত্র সপ্তাহখানেকের কম সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যতীত অন্যসব দেশের কর্মীরা কাজে ফেরা শুরু করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো শর্ত মেনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্লাইট চালু করতে পারেনি।

দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের পর গত ২৬ অক্টোবর বিমানবন্দরে ৬টি আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। গতকাল থেকে ল্যাবে পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও তা হয়নি। কেন হয়নি সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মুখ খুলছে না। যদিও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এসওপি না পাওয়ার কারণে নমুনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে না। বেবিচকের আশ্বাস, আরটিপিসিআর ইস্যুতে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা দু-একদিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমাদের কাজটি দেরি হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, আজকে-কালকের মধ্যে সমাধান হবে।’

তবে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের এসওপি চাওয়ার বিষয়টি তাদের কাছে পরিষ্কার না। দেশটি থেকে তারা এ ধরনের কোনো নির্দেশনাও পাননি। অভিযোগ উঠেছে, একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতেই এই সময়ক্ষেপণ, যার পেছনে রয়েছে বড় ধরনের বাণিজ্য। ল্যাবগুলোর দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা ল্যাব স্থাপন করলেও নমুনা পরীক্ষার অনুমতি পাননি। বর্তমানে যে প্রতিষ্ঠানটি নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছে সেটি গত মাসে এসওপি দিয়েছে। পাশাপাশি তারাও এসওপি জমা দিয়েছে। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানটিকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হলেও তাদের দেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে গঠিত কারিগরি কমিটির সবশেষ বৈঠকে জানানো হয় সকল ল্যাব সমান মূল্যে (এক হাজার ৬০০ টাকা) নমুনা পরীক্ষা করাবে। কিন্তু বেবিচক চেয়ারম্যান তখন শুধু একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েই নমুনা পরীক্ষা করানো যাবে বলে জানান। তবে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। তিনি দাবি করে বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানটি করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে তারা এসওপির আবেদন আগেই করেছিল এবং আরব আমিরাত দূতাবাসের অনুমোদন পায়। সেজন্য তাদের দিয়েই নমুনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। আমরা দূতাবাসের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রাখছি। এসওপি অনুমোদন পেলেই বিভিন্ন ফ্লাইট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নমুনা পরীক্ষার শুরু করা হবে।’

এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানিয়েছেন, ‘গত রোববার বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ওইদিনই আমরা রিপোর্টও পেয়েছি, সেগুলো আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। তারা যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষার শর্ত দিয়েছিল, তাদের অনুমোদন লাগবে। সেই অনুমোদন এখনো পাইনি। সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

একটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেলেও বাকি ছয়টি প্রতিষ্ঠান কেন পায়নি এমন প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি এমিরেটস এয়ারলাইনসের এরিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যেভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিয়ে টেস্ট করছে, বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোরও অনুমোদন যেন সেভাবে নিয়ে আসে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে দুপুরে আমিরাতে একটি মিটিং হওয়ার কথা। আমাদের পাঠানো এসওপি ওদের ন্যাশনাল কমিটি ফর ক্রাইসিস অ্যান্ড ইমার্জেন্সি, ওই কমিটি এটার অনুমোদন দেবে। ছয়টি এসওপি-ই তারা যাচাই-বাছাই করেছে। আমাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এটা একটা ফর্মালিটি মাত্র। সেই ফর্মালিটি ত্বরান্বিত করার জন্য তাদের ওপর চাপও প্রয়োগ করছি।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads