• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

শিশু হাসপাতালে সেবা পেতে বেড়েছে দুর্ভোগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর ২০২১

ঢাকার শিশু হাসপাতালে বেডের অভাবে অসংখ্য শিশু রোগীর চিকিৎসাসেবা মিলছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা না পেয়ে অনেককে ফিরে যেতে হয়েছে। রাজধানীর জুরাইন এলাকা থেকে আসা এক নারী তার ৪ বছর বয়সি মেয়ে শিশুকে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সকাল ৮টা থেকে অপেক্ষা করে বেলা ১২ টা পেরিয়ে গেলেও মেলেনি বেড। এদিকে, সময় যতই গড়াচ্ছিল শিশুটির অবস্থা ততই খারাপ হচ্ছিল। এরকম অসংখ্য শিশু রোগী বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই এসেছেন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে। অনেকেই বহির্বিভাগের সামনে শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন নির্ধারিত চেয়ারে, আবার কেউ জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এমনকি সন্তানের অবস্থা খুবই জটিল হওয়ায় বহির্বিভাগের সামনে অক্সিজেন লাগিয়েও বসে থাকতে দেখা গেছে অভিভাবককে। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষা করার পর টিকিট কাউন্টারে অভিভাবকদের মধ্যে হাতাহাতির মতো ঘটনাও ঘটেছে। পরে নিরাপত্তারক্ষীকে হস্তক্ষেপ করতে হয় সেখানে।

চিকিৎসকরা বলছেন, মৌসুম বদলের এ সময়টাতে দেশে আশঙ্কাজনকহারে শিশুরা ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর, বমি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়াতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতাল সূত্র অনুযায়ী, গত ২৫ সেপ্টেম্বর হাসপাতালটির বহির্বিভাগে আসা রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৬৬ জন, ২৬ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ১১৪ জন, ২৭ সেপ্টেম্বর ৯২৩ জন এবং ২৮ সেপ্টেম্ব ১ হাজার ১২ জন। এসময়টাতে রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরই এ সময়ে শিশু হাসপাতালে বেডের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। একটা বেডের জন্য অভিভাবকদের আকুলতা ছুঁয়ে যায় চিকিৎসকদেরও। কিন্তু বেড না থাকলেতো তারা ভর্তি দিতে পারেন না। বেডের এই ভোগান্তিতে পড়েছেন ৯ মাস বয়সী নুসরাতের মা সুলতানা বেগমও। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি নিয়ে তিনদিন ধরে ভোগা শিশুকে নিয়ে এসে ভর্তি করাতে পারেননি তিনি। তার কথায়, বাচ্চাটার জ্বরের কারণে খিঁচুনি উঠে যায়, মাথা তুলে রাখতে পারে না। এসেছি সকাল ৭টায়, কিন্তু এখনো ভর্তি করাতে পারিনি। বলছে, বসে থাকতে। কতক্ষণ বসে থাকলে এটা সিট পাওয়া যাবে সেটাও জানি না।

শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, মৌসুম বদলের এ সময়টাতে ব্রংকিউলাইটিসের এ পিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। প্রতিবছরই শিশুদের আক্রান্তের হার এ অবস্থাতেই থাকে। আর তখন শিশু হাসপাতালে বেড থাকে না, এটা দীর্ঘদিনের অবস্থা, নতুন কিছু না। সারা বাংলাদেশ থেকে শিশুদের নিয়ে এ হাসপাতালে আসেন অভিভাবকরা। তাদের সবাইকে বেড দেওয়া সম্ভব হয় না।

করোনাকালে হাসপাতালে রোগী সংখ্যা কম ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সেসময়ে বহির্বিভাগে ৩০০ থেকে ৪০০ হতো, কিন্তু এখন সেটা এখন ৮০০ থেকে এক হাজার রোগী আসছে। হাসপাতাল হিমশিম খাচ্ছে রোগী সামলাতে। করোনার সময়ে প্রতিদিন যত রোগী আসতো, তার দ্বিগুণ কখনো কখনো তিনগুণ রোগী আসছে হাসপাতালে। ব্রংকিউলাইটিসের পিকটা শুরু হয়েছে গত এক সপ্তাহ ধরে, তখন থেকেই হাসপাতালের অবস্থা, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads