• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
থামানো যায়নি সংঘাত-সহিংসতা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

পাঁচ ধাপের ইউপি ভোটে ৪৮ প্রাণহানি

থামানো যায়নি সংঘাত-সহিংসতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ জানুয়ারি ২০২২

এ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের পাঁচটি ধাপ শেষ হয়েছে। বাকি আছে আরো দুই ধাপ।  কিন্ত এই পাঁচ ধাপেই নির্বাচনি সহিংসতায় ঝড়ে গেছে ৪৮ প্রাণ। তবে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলছে, গত এক বছরে নির্বাচনি সহিংসতায় প্রাণ গেছে মোট ১২৬ জনের। যার বেশির ভাগই ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে। সর্বশেষ গত বুধবার পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১২ জন। তারপরও নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও আনন্দমুখর বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব। এদিকে, ব্যাপক এই সহিংসতার জন্য দলীয় প্রতীকে নির্বাচনকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভরাডুবি আর বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয় আলোচিত হচ্ছে সব মহলে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) তথ্যমতে, দেশে এর আগে নয়বার ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩ ও ১৯৯২ সালের নির্বাচনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৯৮৮ সালে ৮০, ১৯৯৭ সালে ৩১, ২০০৩ সালে ২৩, ২০১১ সালে ১০ জন নিহত হন। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে সহিংসতায় মারা যান ১৪৩ জন।

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গতকাল বৃহস্পবাির রাত পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, ঝিনাইদহ, গাইবান্ধা, চাঁদপুর, নওগাঁ এবং বগুড়ায় নির্বাচনি সহিংসতায় তারা নিহত হয়েছেন। এদিন ৭০৮ ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনকে ঘিরেও সহিংসতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এর আগে অনুষ্ঠিত চারটি ধাপের ইউপি নির্বাচনেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি হামলা, গোলাগুলি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। 

গত বুধবার ভোটের দিন বগুড়ায় পাঁচজন, চাঁদপুরে দুজন, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ ও নওগাঁয়  একজন করে মারা গেছেন। এছাড়া ঝিনাইদহে গত শুক্রবার নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। এছাড়া নির্বাচনে জাল ভোট, নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোটদানে বাধ্য করা, কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২১ জুন প্রথম ধাপে ২০৪ ইউপি ও ২০ সেপ্টেম্বর ১৬০ ইউপির ভোট হয়। দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৫ ইউপির ভোট হয়েছে ১১ নভেম্বর। চতুর্থ ধাপের ভোট হয় ৮৪০ ইউপিতে ২৬ ডিসেম্বর এবং পঞ্চম ধাপে ৭০৭টি ইউপিতে ভোট হয় চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি। 

গত ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ভোট চলাকালে কেউ মারা না গেলেও ভোট গণনা-পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী ও সিলেটে নিহত হন তিনজন। এ ছাড়া কিছু স্থানে ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, সংঘর্ষ এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ইউপি নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে সহিংসতায় একজন বিজিবি সদস্যসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ধাপে আহত হন দেড় শতাধিক মানুষ। গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ, জাল ভোট, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের ঘটনাও ঘটে। এর আগের ধাপগুলোর মধ্যে বেশি প্রাণহানি ঘটে দ্বিতীয় ধাপে। এই ধাপের ভোটের আগে-পরে অন্তত ১৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে শুধু নরসিংদীতেই মৃত্যু হয়েছে সাতজনের।

পঞ্চম ধাপে গত বুধবার ভোট হয়েছে দেশের ৭০৮টি ইউপিতে। ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টার পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আসতে থাকে সংঘর্ষ-সহিংসতার খবর।

চাঁদপুরের কচুয়া ও হাইমচরের দুই কেন্দ্রে সংঘর্ষে বিকালে দুজনের প্রাণহানির খবর জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মিলন মাহমুদ। তবে সন্ধ্যায় এসপি কার্যালয় থেকে জানানো হয়, কচুয়ায় যিনি নিহত হয়েছেন বলে তখন জানা গিয়েছিল, তিনি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এসপি জানান, হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নে একটি কেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত অজ্ঞাত পরিচয় যুবক বহিরাগত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাইবান্ধার সাঘাটায় যাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে তার নাম আবু তাহের। মেম্বার প্রার্থী আইজল মিয়ার সমর্থক ছিলেন তিনি। আইজলের প্রতিদ্বন্দ্বী রাসেল আহমেদের সমর্থকরা তার ওপর হামলা করে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) ইলিয়াস জিকো।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ভোট চলাকালে ও ভোট গণনাকালে দুই কেন্দ্রে সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুপুরে ভোট চলাকালে গাবতলীর রামেশ্বরপুর জাইগুনি গ্রামের একটি কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে জাকির হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

আর বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটার একটি কেন্দ্রে সন্ধ্যায় ভোট গণনার সময় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চারজন।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ছলেমন খাতুনের মৃত্যু হয়। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা।

চট্টগ্রামের আনোয়ার উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের সিংহড়া রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ওমকার দত্ত (৪৮) নামে এক জন মারা গেছেন। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী টিউবওয়েল প্রতীকের সমর্থক বলে জানা গেছে।

জামালপুরে বকশীগঞ্জের মেরুরচর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন আলামিন নামে এক যুবক। তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী মনোয়ার হোসেনের কর্মী বলে জানা গেছে। এই ইউপিতে নৌকার প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমান।

তবে হতাহতের ঘটনার দায় নিতে নারাজ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও আনন্দমুখর বলে দাবি করেন ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির সচিব বলেছেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটে সহিংসতা ও মৃত্যুর দায় প্রার্থীদের।

তিনি গত বুধবার বিকেলে বলেন, আজকে (বুধবার) নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ছয়জন মারা গেছেন। এটা অবশ্যই দুঃখজনক, তবে ওই ছয় কেন্দ্র ছাড়া অন্য জায়গায় নির্বাচনে তেমন সমস্যা হয়নি। তাই এখন পর্যন্ত যে নির্বাচন হয়েছে, সেটিকে আমরা বলব ভালো নির্বাচন। সামনে নির্বাচন আরও ভালো হবে।

তবে এত প্রাণহানির জন্য ইউপি নির্বাচনে দল থেকে প্রার্থী দেয়ার বিষয়টিকে সামনে এনেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রথা তুলে না দিলে সন্ত্রাস-সংঘাত আরো বাড়বে। নিজ কার্যালয়ে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও সংঘাত যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই। কিন্তু নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। ইউপি নির্বাচনে সন্ত্রাসের কারণ জেনে তা থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন ইসি মাহবুব তালুকদার।

অন্যদিকে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা যেভাবে চলছে, তাতে দেশের রাজনীতি ও দলগুলো হুমকির মুখে পড়বে। বনানীতে রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর মহানগর নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, নির্বাচনব্যবস্থা এভাবে চলতে থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো হারিয়ে যাবে। নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন খুবই অসহায়। তাদের যে ফলাফল ধরিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশন তা-ই ঘোষণা করছে।

রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নির্বাচনে এই সহিংসতার ঘটনায় সরকারকে আক্রমণ করে আসছে। দলটির দাবি, সরকার নির্বাচনিব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন পেশিশক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোট।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা প্রসঙ্গে বলেন, এই সহিংসতার নেপথ্য কারণ মূলত ক্ষমতার লড়াই ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। ক্ষমতাসীনদের দলীয় প্রতীক পাওয়া মানেই জিতে যাওয়ার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ায় মূলত ক্ষমতাসীনদের মধ্যেই এই সংঘাতগুলো হচ্ছে।

তার মতে, যেহেতু নির্বাচিত হলে অর্থবিত্ত তৈরি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যাবে, তাই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বেশিরভাগ এলাকায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা শুনতে চাইছে না।

তিনি বলেন, সহিংসতার ঘটনাগুলোর অধিকাংশই ঘটছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও এর বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর বাংলাদেশের নির্বাচন ছাড়া এমন সংঘাত ও সহিংসতার খবর আর কোনো দেশের নির্বাচনে পাওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন বদিউল আলম।

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দীন নাসিমের মতে, সহিংসতার ঘটনাগুলোর সবই যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হচ্ছে তা ঠিক নয়। তার মতে, পুরনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধেও অনেকে হতাহত হচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচন চলতে থাকায় এসব এখন নির্বাচনি সহিংসতা হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে।

এদিকে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)-এর তথ্যমতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে একই বছরের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত ইউপি, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৬৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ৮৫ জন। নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪১ জন, বিএনপির ২ জন, সাধারণ মানুষ ২২ জন, পুলিশের গুলিতে ১৫ জন এবং একজন সাংবাদিক মারা গেছেন।

ওই পরিসংখ্যানের পর গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে গত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪টি ইউপি নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৪১ জনের হিসাব যোগ করলে মোট মৃত্যু হয় ১২৬ জন। যার বেশিরভাগই ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে সংঘটিত হয়েছে।

এদিকে একের পর এক ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। এর বিপরীতে জয় পাচ্ছে বিদ্রোহী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

সর্বশেষ গত বুধবার অনুষ্ঠিত পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের সংসদীয় এলাকা নৌকার বেশ কয়েকজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট পেয়েছেন যথাক্রমে ১১৪, ১৭৭ ও ২৩২টি। এমন বিপর্যয়ের জন্য প্রার্থীরা দুষছেন দলের নেতাদের বিরোধকে। আর সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এ ধাপে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১১ ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মাত্র একটিতে জিতেছে নৌকার প্রার্থী। আটটিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। বাকি দুটির মধ্যে একটি গেছে জাসদের ঘরে। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীও আছেন বিজয়ীর তালিকায়।

চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে সুপরিচিত ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯টিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা পরাজিত হন। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা জামানত খোয়ান।

২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচনেও ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও চরভদ্রাসনের ১৫টি ইউনিয়নের ১৪টিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের মতো জায়গাতেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা প্রার্থীদের করুণ অবস্থা দেখা গেছে।

ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তত ১২০টি ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। অন্তত ১১০টি ইউপিতে তৃতীয় বা চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন তারা। ২৮টি ইউপিতে নৌকার প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রায় ২০০ প্রার্থীর পরাজিত হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads