• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

যানজটে নাকাল নগরবাসী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ মার্চ ২০২২

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তীব্র যানজট। তবে বেশি যানজট দেখা যায়, রাজধানীর কাওরান বাজার, বাংলামোটর, নিউ মার্কেট, শাহাবাগ, গুলিস্তান, মগবাজার, নতুন বাজার ও বাড্ডা এলাকায়।

ট্রাফিক পুলিশের দাবি, রাস্তার লেন যদি ঠিকমতো না চলে তাহলে একটু বেশি যানজট দেখা যায়। তবে যানজট নিরসনে কাজ করছেন তারা। এদিকে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সকাল থেকেই রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। অনেকের ৩০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে ১-২ ঘণ্টা।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন হারুনুর রশিদ। দৈনিক বাংলা মোড়ে অফিস তার। সকাল ১০টায় অফিস শুরু হয়। রাস্তায় যানজটের কথা মাথায় রেখে এক ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হন তিনি। হাতে এই এক ঘণ্টা সময় রেখেও ঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে তার জন্য।

তিনি বলেন, খিলগাঁও রেলগেট থেকে দৈনিক বাংলা মোড়ে অফিসে যেতে রিকশায় সর্বোচ্চ ১০ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু শাজাহানপুর মোড় আর ফকিরাপুল এলাকায় যানজটের কারণে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় লাগে। গত এক সপ্তাহে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। এখন এক ঘণ্টাতেও পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফ্লাইওভার থেকে শাহজাহানপুর মোড় রাস্তাটুকু একবারে ব্লক হয়ে থাকে। খুব বাজে অবস্থা।

এ অবস্থা হারুনুর রশিদের একার নয়। অফিসগামী হাজারো মানুষকেই প্রতিদিন যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মতিঝিল দিলকুশা এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন যারা তারা বলছেন, ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ অফিস এই এলাকায়। সকাল ১০টায় অফিস শুরু হয়। এ কারণে ৯টার পর থেকেই এসব এলাকায় প্রবেশ পথগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়। খিলগাঁও থেকে দৈনিক বাংলার মোড়ের সড়ক, মুগদা-কমলাপুরের সড়ক, ওয়ারী, টিকাটুলি ও গুলিস্তান হয়ে আসার পথগুলোতে যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে এই যানজট বেড়েছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর থেকে যানজট পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ ও সড়ক প্রসস্তকরণ কাজের জন্য চলাচলের রাস্তা কমে গেছে।

শাজাহানপুর মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য জানান, যানজট মূলত শুরু হয় সকাল ৯টার পর, ১১টা পর্যন্ত চাপ থাকে। মূল কারণ অফিসগামী লোকজন একসঙ্গে বের হয়। সবদিক থেকেই গাড়ি আসতে থাকে। তখন যানজট বেড়ে যায়। আবার অফিস ছুটির পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চাপ থাকে। এই দুই সময় যানজট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। খিলগাঁও থেকে গুলিস্তানে লেগুনা চালান শরীফ নামে এক যুবক। তিনি বলেন, খিলগাঁও থেকে গুলিস্তান যেতে ১৫-২০ মিনিট লাগে। কিন্তু সকালে একঘণ্টাতেও অনেক সময় পৌঁছাতে পারি না।

আবার অফিস শেষে ঘরমুখো যাত্রীদের অবস্থাও অভিন্ন। যানজটের কবলে পড়েছেন উত্তরার যাত্রী মঞ্জু। তিনি বলেন, সদরঘাট থেকে বিকেল ৫টায় রওনা দিয়ে রাত ৮টায় শাহাবাগ আসলাম। মিরপুরের যাত্রী নজরুল ইসলাম বলেন, গুলিস্তান থেকে রওনা হয়েছি সন্ধ্যায়, মাত্র (রাত সাড়ে ৮টা) কাওরান বাজারে এসছি, কখন যে বাসায় যাব। এলিফ্যান্ট রোডে কথা হয় পথচারী ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, জ্যামের কারণে নিউ মার্কেট থেকে হেঁটে বাসায় যাচ্ছি।

কাওরান বাজারে কথা হয় গাবতলী এলাকার যাত্রী বাবলু মিয়ার সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকালে রাস্তায় যেমন যানজট এখনো তেমন যানজট। ভেবেছিলাম একটু দেরিতে অফিস থেকে বের হলে যানজট কমবে, কিন্তু এখন দেখি আরো ভয়াবহ।

কথা হয় বাংলামোটর থেকে মিরপুরের পথচারী সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, গুলিস্তান থেকে পায়ে হেঁটে বাংলামোটর পর্যন্ত এসেছি, রাস্তায় প্রচুর যানজট।

কাওরানবাজার মোড় এলাকায় কথা হয় মোহাম্মদপুরের যাত্রী আবু তালেব মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড ও গুলিস্তান মৎস্য ভবন এলাকায় অনেক জ্যাম তাই হেঁটে বাসায় যাচ্ছি। দায়রা জজ কোর্ট থেকে কারওয়ান বাজার এসেছেন যাত্রী ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম রাতে একটু জ্যাম কমবে কিন্তু না দেখি উল্টো।

মিরপুর থেকে কাওরান বাজারে এসেছেন পথচারী আবুল মিয়া। তিনি বলেন, সংসদ ভবনের আশপাশের রাস্তায় অনেক জ্যাম তাই হেঁটে বসায় যাব।

এ বিষয়ে কথা হয় বাংলামটর মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আক্তার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, শুধু আমাদের বাংলামোটর এলাকায় যানজট না।

শাহবাগ মোড়ে ডিউটিরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট ইমাম হোসেন বলেন, সকাল থেকে রাস্তায় একটু যানজট ছিল এখন একটু কমছে।

গুলিস্তান মোড়ে ডিউটিরত ট্রাফিক সার্জেন্ট তৌফিক ইলাহী বলেন, একদিকে বইমেলা, আবার ২ দিন সরকারি ছুটির আগে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads