• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ এপ্রিল ২০২২

কোনোভাবেই টানা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দামের নাগাল। রমজান মাস শুরু আগে কয়েক দফা বেড়েছিল বিভিন্ন পণ্যর দাম। এখন ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকায় বাড়ছে, ঈদকে ঘিরে যেসব খাদ্যপণ্য বেশি বিক্রি হয় সেগুলোর দাম। এসব খাদ্যপণ্যের মধে রয়েছে পোলাউয়ের চাল, সেমাই, চিনি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, মুরগি। সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বরাবরের মতোই এবারো নিশ্চুপ হয়ে আছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়েছে প্যাকেটজাত পোলাউয়ের চালে। রমজানের শুরুতে কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর ভালোমানের খোলা পোলাউয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা।

ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ সেমাই। ফলে নামিদামি ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের পাশাপাশি বেড়েছে খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া সেমাইয়ের দামও। শুধু সেমাইয়ের দাম নয়, বেড়েছে সেমাই রান্নার প্রধান উপাদান চিনির দামও। কেজিপ্রতি চিনিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কিশমিশ ও কাজুবাদামসহ আনুষঙ্গিক অন্য পণ্যগুলোও।

গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৮০ টাকায়। আর খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।

মুদি দোকানগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের সেমাই বিক্রি করা হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। এর মধ্যে বনফুল, প্রাণ, ওয়েল ফুডের ২০০ গ্রাম লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা প্যাকেট। যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকায়। প্যাকেট প্রতি ১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে সেমাইয়ের দাম। তার মানে কোনো ক্রেতা যদি এসব ব্র্যান্ডের ১ কেজি সেমাই কেনেন তাহলে তাকে ৫০ টাকা বেশি দিতে হবে।

কুলসন, কিশোয়ান, ড্যানিশ ও প্রিন্স ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। যা এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। এছাড়া রাবেয়া ব্র্যান্ডের ঘিয়ে ভাজা ৪০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, আর মিঠাইয়ের ২৫০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।

বাজারে এখন চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি। যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৮০ টাকা। অর্থাৎ ঈদকে কেন্দ্র করে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা। এছাড়া মধ্যম মানের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। আর কাজু বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে।

সুপার শপগুলোতে ১০০ গ্রামের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ২৫ গ্রামের পেস্তাবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ৫০ গ্রামের কাজুবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা। আর ১০০ গ্রামের মিক্সড ফ্রুট বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।

রাজধানীর সদরঘাটের রায়সাহেব বাজারের মদিনা স্টোরের মালিক মোহাম্মদ টিপু বলেন, সেমাইয়ের দাম অল্প বেড়েছে, খুব বেশি নয়। যাতায়াতসহ আনুষঙ্গিক খাতে খরচ বাড়ায় দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, ঈদের বাজার পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা এবার লাভের মুখ দেখব।

রাজধানীর সেগুন বাগিচা কাঁচাবাজারের আল-আমিন জেনারেল স্টোরের মালিক আল-আমিন বলেন, লম্বা খোলা সেমাই বিক্রি করছি ১৪০ টাকা কেজিতে। গত বছর এই সেমাই বিক্রি করেছি ১২০ টাকা কেজিতে।

দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। লকডাউনের কারণে গত দুই ঈদে বিক্রি হয়নি, এবার গত দুই-তিন দিন ধরে বিক্রি শুরু হয়েছে। বিক্রি বাড়ছে, আশাকরি আগামী সপ্তাহে বিক্রি আরো বেশি হবে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চায়না রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ৫০ টাকা কেজি, দেশি আদা ৮০ টাকা কেজি এবং চায়না আদা ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে দেশি মুশুরের ডালের দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। তবে ডিমের দাম কমেছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১০০ টাকা, ডজন প্রতি হাঁসের ডিম ১৫০-১৫৫ টাকায় এবং প্রতি ডজন দেশি মুরগির ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ৫-১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৬৫-১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি কেজি প্রতি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads