• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০২২

দেশবরেণ্য সাংবাদিক, কলাম লেখক ও গীতিকার আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানিয়েছে শত শত মানুষ। শনিবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে শহীদ মিনারে তার মরদেহ আনা হয়। এসময় সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধা জানাতে অংশ নেন সর্বস্তরের মানুষ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, গাফ্‌ফার চৌধুরী শুধু লেখকই ছিলেন না, তিনি আমাদের সমাজের আলোকবর্তিকা। আমি তো মনে করি বাতিঘর। গত কয়েক মাস আগেও প্রবাসীদের একটা অনুষ্ঠান করেছিল। সেখানে হাসপাতাল থেকেও তিনি যুক্ত হয়েছিলেন, সবাইকে জীবিত করেছিলেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

শ্রদ্ধা নিবেদন ও গার্ড অব অনার দেওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে শনিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সরকারের পক্ষে মরদেহ গ্রহণ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

বিকেল সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। চারটার দিকে বিশিষ্ট এই সাংবাদিকের মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন।

১৯৫০ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে আবদুল গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান আবদুল গাফফার চৌধুরী। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন তিনি। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তিনি দৈনিক জনপদ বের করেন।

এরপর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান আবদুল গাফফার চৌধুরী। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে যান তিনি। এরপরই তার প্রবাস জীবনের ইতিহাস শুরু হয়।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’ ও ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট এই সাংবাদিক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads