• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বৃষ্টিতে ধসে যাচ্ছে কোটি টাকার বালুর বাঁধ

  • এসকে সাহেদ, লালমনিরহাট
  • প্রকাশিত ১৭ জুলাই ২০২২

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা নদীর পাড়ে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বালুর বাঁধ বৃষ্টির পানিতেই ধসে যাচ্ছে। বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় লাখো মানুষ।

জানা গেছে, সদর উপজেলার ধরলা নদীর কুলাঘাট ইউনিয়নের ওয়াবদা বাজার থেকে পাশ্ববর্তী মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা ছয়মাথা হয়ে কালিরপাট পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ২০১৭ সালের বন্যায় কুলাঘাট ইউনিয়নের ওয়াবদা বাজার সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বিস্তির্ণ এলাকার ৫শতাধিক বাড়িসহ প্লাবিত হয় শহরের একাংশ। বন্যার পানি শহরের প্রায় সদর হাসপাতাল পর্যন্ত প্রবেশ করে। তলিয়ে যায় প্রধান সড়ক। নষ্ট হয় কয়েক কোটি টাকার বিভিন্ন উঠতি ফসল। পরে ওই বাঁধটি উঁচু ও মজবুত করে তৈরির জন্য এলাকাবাসী দাবী তোলেন। ধরলা নদী পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের ওই দাবীর প্রেক্ষিতে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কুলাঘাট ওয়াবদা বাজার থেকে মোগলহাট বুমকা ছয়মাথা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু করে বাঁধ নির্মাণ করে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের ৫ মাস পরেই বৃষ্টি ও গেল বন্যার পানির তোড়ে ৩ কিলোমিটার উঁচু বাঁধ ধসে গিয়ে অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো কোনো স্থানে বাঁধের অর্ধেক অংশ ধসে গেছে। এমতাবস্থায় আবারও বৃষ্টি ও বন্যা হলে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়ে প্লাবিত হতে পারে নিম্নাঞ্চল। গত ২০১৭ সালের মতো ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পরে নিম্নাঞ্চলের বিস্তির্ণ এলাকার লাখো মানুষ। পানি প্রবেশ করতে পারে লালমনিরহাট শহরে।

ওয়াবদা বাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বয়জ্যেষ্ঠ আব্দুর রশিদ (৬২) অভিযোগ করে বলেন, অবৈধ বোমা মেশিন বসিয়ে ধরলা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে বাঁধ ধসে আবারও নদীর বালু নদীতেই চলে যাচ্ছে।

বাঁধ সংলগ্ন বুমকা এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান (৪৮) বলেন, বাঁধটি উঁচু করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু পুরো বাঁধ ধরলা নদীর বালু দিয়ে তৈরি করায় আমাদের আতংকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। অনেক স্থানে বাঁধ ধ্বসে গেছে। আবারও বৃষ্টি হলে বাঁধটি ভেঙ্গে যাবে বলেও তিনি দাবী করেন।

স্থানীয় মোগলহাট ইউপি সদস্য জয় মলুক বর্মন জানান, বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ না করার জন্য ঠিকাদারকে বার বার নিষেধ করেছি। কিন্তু আমাদের কোন কথা তারা শোনেনি। নিয়ম বহির্ভুতভাবে বোমা মেশিন বসিয়ে বাঁধের একটু দুর থেকে বালু তুলে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই বৃষ্টির পানিতে ধসে যাচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টির কারণে বাঁধের কয়েকটি স্থানের কিছু অংশ ধসে গেছে। ধ্বসে যাওয়া স্থান ঠিক করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। তবে বাঁধের অদুরে ধরলা নদী থেকে বালু তুলে বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads