• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ঢ্যাঁড়শের দাম পেয়ে খুশি ঈশ্বরদীর চাষিরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

জাতীয়

ঢ্যাঁড়শের দাম পেয়ে খুশি ঈশ্বরদীর চাষিরা

  • গোপাল অধিকারী
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০২২

ঈদের পরের সপ্তাহে ঢ্যাঁড়শ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৩ টাকা কেজি দরে। কয়েক দিনের ব্যবধানে এ দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা। রোববার ভাল মানের ঢ্যাঁড়শের পাইকারি দর ২২ টাকা পর্যন্ত দিচ্ছেন বলে জানান আড়তদাররা। খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ক্রেতারা। দাম বাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চাষিরা।

দেশি ও উচ্চফলনশীল জাতের ঢ্যাঁড়স ঈশ্বরদীর স্থানীয় হাট-বাজারের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন চাষিরা। লাভজনক হওয়ায় এক দশক ধরে এ এলাকায় ঢ্যাঁড়সের আবাদ বেড়ে গেছে। ঈশ্বরদীতে ঢ্যাঁড়শের দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

মুলাডুলির আটঘরিয়া গ্রামের ঢ্যাঁড়সচাষি ইয়ামিন খন্দকার বলেন বলেন, ‘বছরের ৯ মাস ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়। মৌসুমের শুরুতেই ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করি। পরবর্তীতে ২০ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এবার হঠাৎ করেই ঢ্যাঁড়শ দু-তিন টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছিল না। বাজারে হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় চাষিরা সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। এখন বাজার স্বাভাবিক হয়েছে। কৃষকরা ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে।’

মুলাডুলি ইউনিয়নের বাঘহাছলা গ্রামের ঢ্যাঁড়শ চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ ঢ্যাঁড়শের দাম কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। গাছ কেটে ও ক্ষেত থেকে ঢ্যাঁড়শ উঠিয়ে গরুকে খাওয়ানো শুরু করেছিলাম। এখন আবার দাম বেড়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।’

উপজেলার মুলাডুলি আড়তের সবজি আড়তদার নজরুল ইসলাম জানান, ঈদের পরে আড়তে ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হয়েছে দু-তিন টাকা কেজি। কৃষকরা বাজারে পাঁচ মণ ঢ্যাঁড়শ নিয়ে এলে গাড়ি ভাড়ার জন্য তিন মণ বিক্রি করে বাকি দুই মণ গরুকে খাওয়ানোর জন্য বাড়িতে ফেরত নিয়ে গেছে। অনেকেই রাগে ক্ষোভে ঢ্যাঁড়শ জমি থেকে ওঠানো বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন। জমিতেই নষ্ট হয়েছে ঢ্যাঁড়শ। মাত্র ২৫ দিনের ব্যবধানে এ চিত্র পাল্টে গেছে। ঢ্যাঁড়শ আড়তে এনে কৃষকরা এখন খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন।

মুলাডুলি কাঁচামাল আড়তের ইজারাদার রেজাউল করিম সোহেল বলেন, প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার-৭ হাজার মণ বেচাকেনা হচ্ছে। ঢ্যাঁড়শের পূর্ণ মৌসুমে বেচাকেনা আরও কয়েকগুণ বেশি থাকে। ঈশ্বরদীসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হচ্ছে। এখানকার কৃষকরা এ ফসল আবাদে ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা দু’পক্ষকে আড়তে ঢ্যাঁড়শের মূল্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে দেখা যায়।’ তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর এ আড়তে ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকার ঢ্যাঁড়শ বেচাকেনা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, ‘এ উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়। সম্ভাবনাময় ও লাভজনক সবজি হওয়ায় প্রতিবছর ঈশ্বরদী উপজেলায় ঢ্যাঁড়সের আবাদ বাড়ছে। লিচুর পরেই এখানে ঢ্যাঁড়সের আবাদ বেশি। এখানকার পাঁচ হাজার কৃষক ঢ্যাঁড়স চাষের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। চাষিরা এখন মাঠ থেকে ঢ্যাঁড়স তুলে বিক্রি শুরু করেছেন। তাঁরা ভালো দামও পাচ্ছেন। এ বছর আবাদি জমির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঢ্যাঁড়সের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads