নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবানের রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ (৫ এপ্রিল ) শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের পর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সকাল ১১টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। সম্মেলনে জানানো হয়, র্যাবের মধ্যস্থতায় ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ৭টার দিকে রুমা বাজার এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার খন্ডকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী রুমা বাজারে সোনালী ব্যাংকে হামলা করে। ওই সময়ে পাশের মসজিদের মুসল্লি, উপজেলা প্রশাসন ভবন, নির্বাহী কর্মকর্তার আনসার ব্যারাকসহ দোকানে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ-আনসার সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। ব্যাংকে ডিউটিরত গার্ড ও ১০ পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে দুইটি এসএমজি, ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চায়না রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি লুট করে। এছাড়া আনসার সদস্যদের কাছ থেকে চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড কার্তুজ লুট করে। যাওয়ার সময় সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার আরও বলেন, র্যাবের চৌকস পোষাকধারী সদস্য রুমা থানার বেথেল পাড়া ও বড়ুয়া পাড়ার আশপাশে অবস্থান নেয়। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসীরা ম্যানেজারকে পরিবারের কাছে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়। এরপর ম্যানেজার ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে র্যাব-১৫ বান্দরবান ক্যাম্পে নিয়ে আসে। র্যাবের মধ্যস্থতায় কোনো ধরণের লেনদেন ছাড়াই ম্যানেজারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
র্যাব মিডিয়া কমান্ডার খন্ডরকার আল মঈন আরও বলেন, ব্যাংক থেকে বের করার পর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে ও গিরিপথে হেঁটে নিয়ে যায়। এই সময় তার সঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ছিল। পথে ম্যানেজারের চোখ বাঁধা খুলে দেওয়া হয়। অন্ধকারে চলার পথে বাটন মোবাইল ফোন ও বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে ওই রাতে আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটের দিকে নীরব অজ্ঞাত স্থানে তাকে ঘুমানোর সুযোগ দেয় সন্ত্রাসীরা। ওই স্থান থেকে ম্যানেজার যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, পাহারা দেয় সন্ত্রাসীরা।
সংবাদ সম্মেলনের পরে সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসা হয় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী মাইছুরা ইশফাতকে। ওই সময়ে নেজাম উদ্দিন, তাকে উদ্ধারে র্যাব, সোনালী ব্যাংকের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সহকর্মী, বন্ধু, আত্বীয়-স্বজনকে ধন্যবাদ দেন।
ওই সময়ে ম্যানেজারের সঙ্গে থাকা তার স্ত্রী মাইছুরা ইশফাত বলেন, তার স্বামীকে অপহরণের পর মনে হয়েছে, জীবনটা অন্ধকারে ছিল। স্বামীকে ফিরে পাবো কি-না অনিশ্চিয়তায় ছিলাম। এখন ফিরে পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি।