ইংরেজিতে Halley's Comet বা হ্যালির ধূমকেতু ১৯৮৬ সালের ১৬ মে সৌরজগতের অভ্যন্তরভাগে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্যাসিনি প্রথম ধারণা করেন- ১৫৭৭, ১৬৬৫, ১৬৮০ সালের ধূমকেতু সম্ভবত একই। তার এই অসমাপ্ত ধারণা কাজে লাগিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমান্ড হ্যালি ১৩৩৭ সাল থেকে ১৬৯৮ সাল পর্যন্ত ২৪টি ধূমকেতুর তথ্য থেকে দেখান- ১৫৩১, ১৬০৭, ১৬৮২ সালের ধূমকেতুর ভেতরে অনেক মিল এবং এই একই ধূমকেতু ১৭৫৯ সালের শেষে আবার দেখা যাবে। তার এই সফল হিসাবের জন্য এই ধূমকেতুর নাম হ্যালির ধূমকেতু। এর আগে নিউটন হ্যালির একটি সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে কেপলারের সূত্র থেকে বিপরীত বর্গীয় নীতি প্রমাণ করেন যার নাম On the Motion of Bodies in Orbit। যার ফলে হ্যালি ধূমকেতুর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার ধরে হিসাব করেন এবং ১৭০৫ সালে A Sznopsis of the Astronomy of Comets-এ দেখান, ধূমকেতুটি ১৭৫৯ সালের শেষে দেখা যাবে। পরে Alexis Clairaut, Joseph Lalande এবং Nicole-Reine Lepaute— এই তিনজন ফরাসি গণিতবিদের একটি দল দেখান হ্যালির হিসাব প্রায় সম্পূর্ণ সঠিক। তবে এই তিন বিজ্ঞানী অবশ্য বলেন, ১৭৫৯ সালের মধ্য এপ্রিলে ধূমকেতুটি আবার দেখা যাবে। বিজ্ঞানী হ্যালির হিসাব অনুযায়ী প্রতি ৭৫-৭৬ বছর পর পর পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে এই ধূমকেতু। এর অফিসিয়াল ডেজিগনেশন হচ্ছে ১পি/হ্যালি। মাঝেমধ্যে একে ‘কমেট হ্যালি’ তথা ‘ধূমকেতু হ্যালি’ নামে ডাকতে দেখা যায়। প্রতি শতাব্দীতেই আকাশে কোনো কোনো তারা অনেক উজ্জ্বলভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এর অনেকগুলোই আবার দীর্ঘসময় ধরে দৃশ্যমান থাকে। কিন্তু হ্যালির ধূমকেতু একমাত্র স্বল্পমেয়াদি ধূমকেতু যা খালি চোখেও স্পষ্ট দেখা যায়। সে হিসেবে এটি খালি চোখে দৃশ্যমান একমাত্র ধূমকেতু যা একজন মানুষের জীবদ্দশায় দুবার দেখা দিতে পারে। ১৯৮৬ সালের পর ২০৬১ সালে এটি আবার পৃথিবীর আকাশে দেখা দেবে।