• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

মোনাফেক নিকৃষ্ট চরিত্রের নাম

  • মাওলানা মুনীরুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ০৫ মার্চ ২০১৯

মোনাফেক একটি নিকৃষ্ট চরিত্রের নাম। মোনাফেক মানে কথায় এবং কাজে দ্বিমুখী আচরণ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘চারটি স্বভাব এমন যার সবগুলো কারো মধ্যে থাকলে সে পুরোদস্তুর মোনাফেক, আর যার মধ্যে এর কোনো একটি থাকবে, সে যতক্ষণ তা পরিত্যাগ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যে মোনাফেকির একটি স্বভাবই থাকবে। স্বভাব চারটি হচ্ছে— যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় সে তাতে খেয়ানত করে, যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন কোনো ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে এবং যখন কারো সঙ্গে ঝগড়া করে গালমন্দ করে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

একবার এক পাপীষ্ঠ মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করল, ইয়া রসুলুল্লাহ! এমন কোনো অপরাধ নেই যা আমি করি না। আমি কীভাবে এ চরম পাপাসক্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি? রসুলুল্লাহ (সা.) লোকটির কথা শুনে বুঝলেন, সত্যি সত্যি লোকটি আলোর পথে আসার উপায় খুঁজছে। তাই তিনি বললেন, তুমি আজ থেকে মিথ্যা কথা পরিহার কর। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। লোকটি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই সংক্ষিপ্ত নিষেধ বাক্যে খুশি হয় এবং বিষয়টি সহজসাধ্য মনে করে সঙ্গে সঙ্গে আর মিথ্যা না বলার প্রতিজ্ঞা করল। এরপর যখন নামাজের সময় হলো, তখন মহানবী (সা.)-এর কাছে মিথ্যা বলার ভয়ে নামাজ আদায় করল। লোকটির আরেকটি বদঅভ্যাস ছিল, রাতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মদপান করা। কিন্তু এবারো রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে করা ওয়াদার কথা স্মরণ করে মদের গ্লাস ছুড়ে ফেলে দিল। মিথ্যা বলার ভয়ে সে আর কোনো পাপই করতে পারল না। এ জন্যই মিথ্যাকে সব পাপের জননী বলা হয়।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মিথ্যা তো তারাই বানায় যারা আল্লাহর নিদর্শনগুলোর ওপর ইমান রাখে না। বস্তুত তারাই মিথ্যাবাদী। (সুরা নাহল : ১০৫) মিথ্যা বলার পরিণাম খুবই ধ্বংসাত্মক। এর জন্য দুনিয়ায় রয়েছে ধ্বংস আর আখিরাতে রয়েছে অপমান ও লাঞ্ছনা। মিথ্যার কারণে অন্তরে কপটতার সৃষ্টি হয়। মিথ্যা পাপাচার ও জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। মিথ্যাবাদীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় না। মিথ্যার কারণে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জায়গাতেই চেহারা বিবর্ণ ও মলিন হয়ে যায়।

 

লেখক : ইসলামী গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads