• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
সামাজিক জীবন ও ন্যায়বিচার

সামাজিক জীবন ও ন্যায়বিচার

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

সামাজিক জীবন ও ন্যায়বিচার

  • মাওলানা তাওহিদ আনোয়ার
  • প্রকাশিত ০৬ মার্চ ২০১৯

প্রাক-ইসলামী যুগে আরবের সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ ও জঘন্য ছিল। বংশগত ও গোত্রগত আভিজাত্য, অহংকার, ঈর্ষা ও বিদ্বেষ সমাজজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। আরব সমাজে ক্রীতদাস প্রথা প্রচলিত ছিল প্রাচীনকাল থেকেই। পণ্যসামগ্রীর মতো তারা হাটবাজারে কেনাবেচা হতো। দাসদাসীদের সন্তান-সন্ততির ওপর প্রভুর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত ছিল। তা ছাড়া জাহেলি যুগে নারীর অবস্থা ছিল সীমাহীন অবমাননাকর ও হূদয়বিদারক।

সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, কারো গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তার মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে যেত এবং বেশিরভাগ সময় কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। গোটা আরব যখন এমন ঘোর তমসাচ্ছন্ন, অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন মুক্তির দিশারি হয়ে সত্য ও ন্যায়ের ঝান্ডা নিয়ে সারা জাহানের রহমতস্বরূপ আবির্ভূত হলেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)। তিনি বহুধাবিভক্ত আরব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করলেন। কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়ার মতো গর্হিত কাজ চিরতরে রহিত হলো এবং নারীরা পেল মায়ের মর্যাদা। পাশাপাশি তিনি সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সব পণ্যদ্রব্য তথা মদ, জুয়া, সুদ ইত্যাদি নিষিদ্ধ করলেন। ফলে সমাজে আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। একসময়ের সবচেয়ে উচ্ছৃঙ্খল ও বর্বর একটি জাতি এমন জাতিতে পরিণত হয়, মানবতার ইতিহাসে যার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া বিরল। আর এটি সম্ভব হলো সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ভিতর দিয়ে।

সামাজিক ন্যায়বিচার ইসলামী সমাজব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি এবং সামাজিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের প্রধান পূর্বশর্ত। সমাজে যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। মহান আল্লাহতাআলা বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা (সর্বদাই) ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকো এবং আল্লাহতায়ালার জন্য সত্যের সাক্ষী হিসেবে নিজেকে পেশ করো।

যদি এ কাজ তোমার নিজের পিতা-মাতার কিংবা নিজের আত্মীয়স্বজনের ওপরও আসে (তবুও তোমরা তা পালন করবে), সে ব্যক্তি ধনী হোক কিংবা গরিব (এটা কখনো দেখবে না, কেননা), তাদের উভয়ের চেয়ে আল্লাহতায়ালার অধিকার অনেক বেশি, অতএব তুমি কখনো ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যদি তোমরা পেঁচানো কথা বলো কিংবা সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকো, তাহলে জেনে রেখো, তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহতায়ালা তার যথার্থ খবর রাখেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত ১৩৫) এ জন্য ইসলাম সবসময় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

 

লেখক : ইসলামবিষয়ক চিন্তাবিদ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads