• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

ধর্ম

থার্টি ফার্স্ট নাইট : ইসলামের নির্দেশনা

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

আল্লাহপাক আল-কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দীন হচ্ছে ইসলাম।’ বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ ইসলামধর্মে বিশ্বাসী। এ দেশের সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’। ইসলামে কোনোপ্রকার কু-কালচার বা বিজাতীয় কৃষ্টি কিংবা অপসংস্কৃতি উদযাপনের অনুমোদন নেই। থার্টি ফার্স্ট নাইট নামে আতশবাজি, নষ্টামির নির্লজ্জ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় আমাদের দেশেও। থার্টিফার্স্টসহ ইসলামবিরোধী কোনো কাজ ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে ডাকঢোল পিটিয়ে হতে পারে না। থার্টিফার্স্ব নাইট এবং অপসংস্কৃতিসহ সব ইসলামবিরোধী কাজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে থার্টিফার্স্ট নাইটের ন্যায় বেহায়াপনা ও ইসলামবিরোধী কাজগুলো থেকে সরকারকর্তৃক মুসলমানদের বিরত রাখা দায়িত্বের দাবিদার।

 

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘একশ্রেণির লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অজ্ঞভাবে অনর্থক কথা (বাদ্য-বাজনা) ক্রয় করে এবং তাকে আনন্দ-ফূর্তি হিসাবে গ্রহণ করে, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা লুকমান, আয়াত-৬) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন।’ নাফে (র.) বলেন, একদিন ইবনে উমর (রা.) বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শুনতে পেয়ে দুই কানে দুই আঙুল ঢুকিয়ে রাস্তা থেকে সরে যান। অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, নাফে তুমি কিছু শুনতে পাচ্ছ কি? আমি বললাম, না। তখন তিনি তার দুই আঙুল দুই কান হতে বের করে বললেন, একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। তিনি বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শুনে কানে আঙুল ঢুকিয়ে রাস্তা থেকে সরে গিয়েছিলেন এবং আমাকে এভাবে জিজ্ঞেস করেছিলেন, যেভাবে আজ তোমাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৯২৪)

 

নগ্ন নারীর পুংমিশ্রণ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যুবক-যুবতীদের অবিমিশ্রণ জাহেলিয়াতকেও হার মানায়। নারী নগ্নতার এই অপসংস্কৃতি দেশকে দ্রুত নিয়ে যাচ্ছে নিম্নসংস্কৃতিতে। নতুন প্রজন্মের জন্য চরিত্রবান মায়ের সংকট তৈরি করছে তারা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুই শ্রেণির জাহান্নামী রয়েছে, যাদের আমি এখনো দেখিনি। এমন সমপ্রদায়, যাদের হাতে গরু পরিচালনা করার লাঠি থাকবে। তা দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। আর নগ্ন পোশাক পরিধানকারী নারী, যারা পুরুষদেরকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও পুরুষের দিকে আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র, উঁচু কাঁধবিশিষ্ট উটের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকী জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ তার সুগন্ধি অনেক দূর থেকে পাওয়া যায়।’ (মুসলিম, মিশকাত হাদিস নং- ৩৫২৪) অত্র হাদিসে আঁটসাঁঁট, অশালীন, অমার্জিত পোশাক পরিধানকারী দুর্বলচিত্ত, মাথার চুল উপরে তুলে বাঁধা নারীদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদেরকে জান্নাতহূত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এরূপ আরো হাদিস রয়েছে। যেগুলোতে অশালীন নারীর নিশ্চিত ক্ষতির হুঁশিয়ার করা হয়েছে। এখানে যে একটি বিষয় উল্লেখ করতেই হয়, তা হলো, নারী খেল-তামাশা, উল্লাস-নৃত্য করে তার যৌবন উপভোগ করার কারণে শাস্তি পাবে। তেমনিভাবে যুবকও অশ্লীলতা ও বেহায়াপনায় লিপ্ত হওয়ার কারণে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

 

কিন্তু যে পুরুষ পরিবারের দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়েন, তাহাজ্জুদ পড়েন, নফল রোজায় অভ্যস্ত হন, মুখে দাঁড়ি রেখে ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে চলাফেরা করেন। কিন্তু তিনি পরিবারের সদস্যদেরকে উত্তমভাবে নজরদারি করেন না; অশ্লীল-নষ্টামি কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখেন না; এমন ভদ্রজনকেও হাদিসে ‘দাইয়ূস’ বলা হয়েছে। দাইয়ূস হলো-যে ব্যক্তি তার পরিবারকে বেহায়াপনার সুযোগ দেয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তিন ব্যক্তির উপরে জান্নাত হারাম করেছেন। মদ্যপায়ী, পিতামাতার অবাধ্য ও দাইয়ূস। যে তার পরিবারে অশ্লীলতাকে স্বীকৃতি দেয়।’ (সহিহুল জামে হাদিস নং-৩০৫২) দাইয়ূস এমন একটি গোনাহ-যাতে নিজে পাপ করার প্রয়োজন হয় না, অন্যের পাপ দেখে নীরব থাকলেই পাপ অর্জিত হয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি পরিবারকে যথাসাধ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন, তাতে তার কোনো পাপ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত-২৮৬)

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads