• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

ইসলামের দৃষ্টিতে নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ

  • প্রকাশিত ১৪ এপ্রিল ২০২১

আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। এ দিনে বাঙালিরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে। মঙ্গল শুভযাত্রা করে থাকে। যা ইসলাম সমর্থিত নয়। এগুলো অশ্লীলতা ও শিরকের অনুকরণ রয়েছে। যা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। আবার অনেকে নববর্ষের নতুন দিনে সূর্যকে স্বাগত জানিয়ে থাকে। মূলত এ ধরনের কর্মকাণ্ড সূর্য-পূজারী সমপ্রদায়ের অনুকরণ মাত্র। সূর্যকে স্বাগত জানানো বা এ কাজে অংশগ্রহণ করা সুস্পষ্ট শিরক। কোনোভাবেই এই কাজ করা যাবে না। নিজে বিরত থাকতে হবে এবং বন্ধবান্ধব, আত্মীয়স্বজন ও পরিবার-পরিজনদেরকে এ ধরনের শিরকি কাজ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। এটা শয়তানের কাজ। মানুষের ভক্তি ও ভালোবাসাকে প্রকৃতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টির সাথে আবদ্ধ করে তাদেরকে শিরক বা অংশীদারিত্বে লিপ্ত করানো শয়তানের সুপ্রাচীন পদক্ষেপ। শয়তানের এই কূটচালের বর্ণনা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারীমে তুলে ধরেছেন-‘আমি তাকে ও তার জাতিকে দেখেছি, তারা আল্লাহকে ছেড়ে সূর্যকে সিজদা করছে এবং শয়তান তাদের কার্যাবলিকে তাদের জন্য শোভনীয় করেছে।’ (সুরা আন নামল, আয়াত-২৪)

‘পুরোনো বছরের সব গ্লানি মুছে নতুন উদ্যমে নতুন আনন্দে শুরু হোক নতুন বছর। নতুন বছর তোমার জীবনে বয়ে আনুক নতুন কল্যাণ, অনাবিল আনন্দ।’ আমরা এমনটাই কামনা করে থাকি। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, প্রিয়জনকে এ ধরনের বার্তা পাঠিয়ে থাকি। আবার এমনটিও দেখা যা-নববর্ষের শুভেচ্ছা না জানালে মন খারাপ হয়। এ নিয়ে অনেক সময় ঝগড়াও বেধে যায় আপনজনদের সাথে। অন্যের ভালো চাওয়া, মঙ্গল কামনা করা; নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। তবে এ চাওয়াটা কি একদিনের জন্যই? তাছাড়া নববর্ষ বা নতুন বছর কি আপনার জন্য শান্তি, সফলতা নিয়ে আসতে পারবে?

বাংলাসহ সকল নববর্ষ উদযাপন অমুসলিমদের উৎসব। এর সাথে মুসলিমদের কোনোই সম্পর্ক নেই। ইসলামের সাথে সামান্যতমও যোগসূত্র নেই নববর্ষ উদযাপনের। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এবং অন্যান্য ইসলামিক স্কলারগণের কেউ কোনো নববর্ষই পালন করেননি বা কোনোরকম সমর্থনও করেননি। নববর্ষ উদযাপন মূলত অমুসলিমদের কৃষ্টি-কালচার। তারা তাদের ধর্মীয় অনুভূতি থেকে এটা পালন করে থাকে। নববর্ষ উদযাপন করে অমুসলিমদের অনুসরণ করা মুসলমানদের জন্য বৈধ নয়। ইসলামে তা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তুমি কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করো না।’ (সুরা আহজাব, আয়াত-৪৮) হুজুরপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি বিজাতিদের সাথে সাদৃশ্য রাখে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (মিশকাত শরিফ) হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করলো সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।’ (আহমদ, আবু দাউদ, মিশকাত, হাদিস নং-৪৩৪৭)

বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ বিশেষ কোনো দিন নয়। এটা অন্যান্য দিনের মতোই একটা দিন। এতে কোনো ফজিলত-বরকত নেই। সব ধরনের নববর্ষ উদযাপন সম্পূর্ণই হারাম। নববর্ষের কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা যাবে না। আমাদের ভাই-বোন, ছেলে-মেয়েরা বিধর্মীদের নববর্ষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে যেন জাহান্নামের দিকে অগ্রসর না হয়, সেদিকেও শক্ত নজর রাখতে হবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ও পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা আত-তাহরীম, আয়াত-৬) ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘তোমাদের সবাই রাখাল (অভিভাবক, দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের সবাইকে নিজ নিজ রাখালি সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। ইমাম একজন রাখাল এবং তাকে নিজের রাখালি সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। ব্যক্তি তার পরিবারবর্গের রাখাল, স্ত্রী তার স্বামীর ঘর-সংসারের রাখাল এবং খাদেম তার মনিবের সম্পদের রাখাল।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং-২১৩)

লেখক : আবু আবদুল্লাহ

আলেম, প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads