• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪২৯
নামের বানান শিখুন

ভুল বানানে এভাবেই আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করে ওপার বাংলার টেলিভিশন ‘জি বাংলা’

সংগৃহীত ছবি

শোবিজ

নামের বানান শিখুন

  • আল কাছির
  • প্রকাশিত ০৬ নভেম্বর ২০১৮

গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘শঙ্খচিল’ ছবিটি কলকাতায় মুক্তি পেয়েছিল ২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিল। মুক্তির আগে কলকাতার প্রিয়া সিনেমা হলে একটি প্রীতি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। কলকাতার নামজাদা চারজন সিনে সাংবাদিক ও চারজন পরিচালক অংশ নিয়েছিলেন এ বিতর্কে। বিষয় ছিল, ‘বাংলা সিনেমা সীমানা পেরিয়ে’। প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির মডারেশনে সেদিন খুব জমে উঠেছিল বিতর্ক। প্রতিযোগিতা শেষে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিচালক গৌতম ঘোষকে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘দেশভাগের ৬৯ বছর পর কেন দেশভাগ প্রেক্ষাপট নিয়ে ছবিটি বানালেন? আপনি কি বাঙালির ইমোশনকে পুঁজি করলেন না?’ উত্তরে গৌতম বাবু অনেকগুলো কথাই বলেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম কথাটি ছিল, ‘দিন শেষে সব পরিচালক-প্রযোজকই ব্যবসায়িক দিকটা চিন্তা করেন।’ ইচ্ছা ছিল এ বিষয়ে পরে গৌতম বাবুর সঙ্গে বিস্তর আলাপ করার। পরে অবশ্যই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একাধিকবার দেখাও হয়েছে। কিন্তু আলাপের পরিবেশ না থাকায় হয়ে ওঠেনি।

ওপার বাংলার পরিচালকরা বাঙালির ইমোশনকে ভালোই পুঁজি করতে পারেন। এটা বোঝানোর জন্যই উপরের ঘটনাটি বলা। সেই ইমোশনকে আবারো পুঁজি করে দেখাল জি বাংলা। গানের প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা পা’তে প্রয়াত কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করেছে চ্যানেলটি। শুধু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করেছে তারা। সেটি এক প্রকার স্পষ্টই। অনুষ্ঠানের রোববারের পর্বে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিযোগী নোবেলসহ সবাই স্মরণ করেন আইয়ুব বাচ্চুকে। উপস্থাপকের ঘোষণার পর ‘সেই তুমি’ গানের মুখটুকু গান অনুপম রায়। তারপর ‘রুপালি গিটার’ পাঞ্চ করে গান নোবেল। পরে আবার ‘সেই তুমি’তে ফিরে আসে সবাই।

জি বাংলার এ উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার। কিন্তু কিছু দায়িত্বহীনতার অভাবে সে প্রশংসা পুরোপুরি করতে পারলাম না। প্রশংসার জল পুরো ঘোলা হয়ে গেল যখন বুঝতে পারলাম, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে টিআরপির কাটতি ওঠানোর জন্য ছিল এ স্মরণ। আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করা হলো, খুব ভালো লাগল। কিন্তু তার নামের ব্যাপারে কেন এত উদাসীন হলো অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ? ‘আইয়ুব বাচ্চু’কে কেন ‘আয়ুব বাচ্চু’ লেখা হলো? অনেকে হয়ত বলবেন, ওপার বাংলার বানানরীতি আলাদা। তাই বলে একজন কিংবদন্তির নাম ভুল লিখতে হবে? আইয়ুব বাচ্চু শুধু একটা নাম নয়, সিগনেচারও বটে। অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ চাইলে গুগল থেকেও আইয়ুব বাচ্চুর নামের বানানটা দেখে নিতে পারত। কিংবা বাংলাদেশি প্রতিযোগীদের কাছ থেকেও জানতে পারত। কিন্তু তারা হয়ত সেটি করেনি। করলে কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর নামের বানানটা ভুল দেখতে হতো না। ফলে জি বাংলারই অন্য একটি প্রতিযোগিতার বিচারকের মতো আমারও বলতে ইচ্ছে করে— ‘রান্নাটা ভালো ছিল, কিন্তু পরিবেশনে একটু দুর্বলতা ছিল।’

আইয়ুব বাচ্চু স্মরণ পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী অনুপম রায়। অনুপম আর নোবেলের কণ্ঠে আইয়ুব বাচ্চুর গান দুটি কেমন যেন খাপছাড়া মনে হয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিযোগীদের কোরাস গাওয়াটাও কাঁটা কাঁটা লেগেছে। আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করা এ দুটি গানে একজন গিটার বাদকের অঙ্গভঙ্গি সত্যি বিরক্তিকর ছিল। অনুষ্ঠানে রূপম ইসলামকে অতিথি করা হলে হয়ত টিআরপিটা আরেকটু বাড়ত। কারণ রূপমের সঙ্গে অনেক স্মৃতি ছিল আইয়ুব বাচ্চুর।

দুঃখিত জি বাংলা। দুঃখিত সা রে গা মা পা। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য টিআরপি বাড়ানোর লক্ষ্যে করা আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ পর্বটি আমি নিতে পারিনি। আবার হয়ত অনেকে নিয়েছেও। অনুষ্ঠানের পরিচালককে বলছি, আইয়ুব বাচ্চু কোনো টিআরপি বাড়ানোর কন্টেন্ট নয়। তিনি একজন কিংবদন্তি। তাকে নিয়ে স্মরণ পর্বটি করার সময় আপনাদের আরো সতর্ক থাকা দরকার ছিল। যেমনটা আপনারা থাকেন আশা ভোঁসলেকে নিয়ে কোনো পর্ব করলে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads