• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: সংগৃহীত

পর্যটন শিল্প

পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গুরুত্ব বাড়ানোর তাগিদ

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০১৮

তৈরি পোশাক শিল্পের চেয়েও বড় বাজারে পরিণত হচ্ছে পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত। বড় শিল্প গড়ে না উঠলেও শুধু পর্যটন শিল্পের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে নেপালের মতো দেশ। বাংলাদেশকেও পর্যটন আকর্ষণে আরো উদ্যোগ নিতে হবে। এর জন্য সবার আগে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ আয়োজিত গবেষণা ফলাফল বিস্তরণ কর্মশালায় বক্তারা রোববার এসব কথা বলেন।

রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মফিজুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামীমা নার্গিস ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শামীমা সুলতানা। কর্মশালায় পর্যটন শিল্প নিয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন কমার্স কলেজ ঢাকার অধ্যাপক ড. এএম শওকত ওসমান। শস্য বহুমুখীকরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী কলেজের সহকারী অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, হাতে টাকা হলেই মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে বেরিয়ে পড়ে। এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে অনেক দেশ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ ছাড়া ফসল বহুমুখীকরণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদকক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।

মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মধ্যে প্রধান তিনটি হচ্ছে পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যসেবা। এসব খাতে উন্নতি করার মাধ্যমে অর্থনীতি টেকসই করা সম্ভব। ৩ থেকে ৪ বছরে আমরা অনেক জমি পেয়েছি। প্রচুর নতুন চর জেগে উঠেছে। তাছাড়া নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমেও অনেক জমি পাওয়া যাবে। এসব জমির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি জমি বাড়াতে হবে।

পর্যটনের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আধুনিকায়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টেকনাফে পর্যটনের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে দেশে প্রকৃত পর্যটকদের নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। এখন যাদের পর্যটক হিসেবে দেখা হচ্ছে তাদের বড় অংশ এদেশে ব্যবসা বা অফিস সংক্রান্ত কাজে আসেন। এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে  ইমিগ্রেশনসহ অনেক খাতে পরিবর্তন করতে হবে।

ড. এএম শওকত ওসমান তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, দেশের পর্যটন খাতের আকার ৫৩০ কোটি ডলার। জিডিপিতে মাত্র ২ দশমিক ২ ভাগ অবদান রাখছে এ খাত। অথচ থাইল্যান্ডের জিডিপির ৯ দশমিক ২, ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ৬, নেপালে ৩ দশমিক ৬, ভারতে ৩ দশমিক ৩ ও মালয়েশিয়ায় জিডিপির ৪ দশমিক ৭ ভাগ আসছে পর্যটন খাত হতে। এই খাতে বিনিয়োগও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কম।

দেশে প্রচুর হোটেল হলেও পর্যটন সুবিধা এখনো সরকারি সেবা নির্ভর। সরকারি হিসাবে বছরে ৪ লাখ পর্যটক দেশে আসলেও তাদের বড় অংশ বাণিজ্যিক বা অন্যান্য কারণে ভ্রমণে আসছেন। পর্যটকদের ৪০ ভাগ কক্সবাজারনির্ভর। মাত্র দুই-তিনটি স্থানে যাচ্ছেন ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পর্যটক। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটক আকর্ষণে সরকারিভাবে চিহ্নিত সাড়ে সাতশ’ স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ অবকাঠামো গড়ে তোলার সুপরিশ করেন তিনি।

জহিরুল ইসলাম তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, তিন দশকে দেশের উত্তরাঞ্চলে চাষাবাদে বড় পরিবর্তন এসেছে। তবে রাজশাহী অঞ্চলে তিন ফসলি জমিগুলো পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে না। জমির পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করে এসব অঞ্চলে ফসল উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে তার গবেষণার ফলাফলে দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads