• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

তেহরানের বিলবোর্ডে নারীমুখ

  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০১৮

তেহরান শহরের কোনো প্রান্তের বিলবোর্ডে সেনা অফিসারের ছবি। কোথাও যুদ্ধের চিত্রগ্রাহক। কোথাও অলিম্পিক্স জয়ীর মুখ। প্রত্যেক ছবিই কোনো না কোনো মহিলার। এমন দৃশ্যই এখন ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তাঘাটে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল মহিলাদের এভাবেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে ‘রক্ষণশীল’ দেশটিতে।

২০১৪ সালে ফিল্ডস মেডেল জিতেছিলেন এ দেশের মহিলা-গণিতজ্ঞ মরিয়ম মির্জাখানি। অঙ্কে নোবেলের সমতুল এই পুরস্কার নারী হিসেবে প্রথম পেয়েছিলেন তিনিই। ২০১৭ সালে মাত্র ৪০ বছর বয়সে মারা যান তিনি। মরিয়মের মুখ এখন বিলবোর্ড জুড়ে। এই রকম আরো অনেকেই আছেন। চিত্রশিল্পী, খেলোয়াড়, বিজ্ঞানী— এমন বহু বিশিষ্ট মহিলা। ছবিতে কারো কারো মাথা কালো পর্দায় ঢাকা। কেউ আবার ইসলামি পোশাক পরেননি। ছবিতে উল্লেখযোগ্য মুখের মধ্যে আছেন শাহলা রিয়াহি, ইরানের প্রথম মহিলা পরিচালক। আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের ছবি তুলেছিলেন আরেক মরিয়ম। তিনি মরিয়ম কাজেমজাদে, ইরানের প্রথম যুদ্ধ চিত্রগ্রাহক— আছে তাঁরও মুখ। আছেন মার্জেই হাদিদ চি, ‘ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ডস কোর’-এর প্রথম মহিলা কম্যান্ডার। নারী-অধিকার রক্ষার আন্দোলনে পরিচিত নাম মার্জেই পরে সাংসদও হয়েছেন। আধুনিক ইরান নিয়ে গবেষণা করে প্রথম মহিলা শিক্ষাবিদ হিসেবে উঠে আসেন নুসরত আমিন। আছেন তিনিও। ছবিতে আছেন ইরানের আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের পথিকৃৎ আলেনুশ তেরিয়ান। প্রথম মহিলা সাংবাদিক মরিয়ম আমিদ-সেমনানিও জায়গা করে নিয়েছেন বিলবোর্ডে। ১৯১৩ সালে মহিলাদের দৈনিক ‘ব্লসম’ চালু করেছিলেন তিনি।

কীভাবে শুরু হল এই উদ্যোগ? জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে তেহরানের মেয়র হিসেবে যিনি নির্বাচিত হন, তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে এর পিছনে। তিনি সংস্কারপন্থী হিসেবে উঠে এসেছিলেন তেহরানে। এর আগে প্রশাসনে রক্ষণশীল লোকজনকেই দেখা গিয়েছে। সে সময়ে মহিলাদের ভূমিকা নিয়ে এত প্রচার ভাবাই যেতো না, বলছেন প্রশাসনের ভেতরেরই লোকজন। তবে এখন সফল মহিলাদের মুখ শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশংসা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তেহরানের এমপি ফাতেমে সইদি বলছেন, এই প্রচারে ভাল হচ্ছে। তেহরান পেরিয়ে অন্য শহরেও মহিলাদের এভাবে প্রচারের আলোয় আনার দাবি উঠছে। এতে মহিলারাই অনুপ্রাণিত হবেন।

কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, এতে খুব বেশি অর্জন হবে না। মহিলাদের অধিকার বাস্তআয়নের জন্য কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কিছু দিন আগেই এখানে এক মহিলা হিজাব আইনের প্রতিবাদ জানাতে প্রকাশ্যে হিজাব খুলে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাঁকে দু’বছরের জন্য জেলে পাঠাতে দেরি করেনি প্রশাসন।

যে গণিতজ্ঞ মরিয়ম মিরজাখানিকে নিয়ে এখন এত হইচই করা হচ্ছে, তাঁকে এক সময় দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন একজন। এই মরিয়ম আমেরিকায় স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরিচিতি পান। ক্ষুব্ধ ওই ব্যক্তি জানাচ্ছেন, মরিয়ম যদি থেকে যেতেন, হিজাব আইন না মানলে শিক্ষকতার সুযোগটাই তো পেতেন না!

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads