• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

চীন-পাকিস্তান করিডর ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০১৮

চীন ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে ‘দ্য আমেরিকান ইন্টারেস্ট’র প্রতিবেদনে শ্লেষমিশ্রিত বক্তব্যটা ছিল এমন- ‘তাদের সম্পর্ক এখন মধুর চেয়েও মিষ্টি আর গভীরতম সাগরের চেয়েও গভীর’। এমন মন্তব্যের পেছনে কারণও আছে, সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েই দুই দেশ পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশটিতে সামরিক নৌ-ঘাঁটি নির্মাণের কথা জানায় চীন। এর মাধ্যমে ইসলামাবাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিশেষ বন্ধুত্বে’র জায়গা দখল করতে এগিয়ে আসে চীন। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তুলতে যাচ্ছে চীন।

চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি) হলো দুই দেশের মধ্যে গড়ে ওঠা এক বিশেষ অর্থনৈতিক করিডর। ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবিওআর) নীতির অন্তর্গত এই প্রকল্প গড়ে তোলা হবে চীনের অর্থায়নেই। দুই হাজার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই করিডরটি পাকিস্তানের গদর শহরের গদর বন্দর থেকে চীনের শিনজিং প্রদেশের কাশগর পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পে গদর ও কাশগর মহাসড়ক এবং রেলপথ দ্বারা যুক্ত হবে। এ ছাড়া এই পথে অপটিক্যাল ফাইবার বসানো হবে দ্রুত যোগাযোগের জন্য। তেল ও গ্যাসের পাইপলাইনও এই পথে নিয়ে যাওয়া হবে। এই প্রকল্পে গদর ও কাশগরের সঙ্গে ইসলামাবাদ, লাহর ও করাচিও যুক্ত হবে। এ ছাড়া এই করিডরের পাশে প্রায় ১২টির মতো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে চীন।

এ বিষয়ে হাওয়ার্ড বাক সেন্টারের গবেষক হ্যারিসন আকিন্স মার্কিন গণমাধ্যম নিউজ উইককে বলেন, দুই দেশের মধ্যে যে অর্থনৈতিক করিডর গড়ে উঠেছে তাতে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ পাকিস্তানে চীনের বিনিয়োগ দাঁড়াবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলারের বেশি। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও চীনের এই সম্পর্ক উন্নয়নের ফলে ট্রাম্প শিগগিরই বুঝতে পারবেন, একতরফা চাপ দিয়ে মার্কিন নীতি বাস্তবায়নের সক্ষমতা তার কতটুকু।

এদিকে এই করিডর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারতেরও মাথাব্যথার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শঙ্কর মেনন বলেন, পাকিস্তান থেকে আসা অর্থনৈতিক করিডর কাশ্মিরের ওপর দিয়ে চলে গেছে; যা ভারতের জাতীয় সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। এ অবস্থায় পুরো কাশ্মির উপত্যকা ভারতের অংশ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কাশ্মিরের একটি বিরাট অংশ পাকিস্তানের মধ্যে পড়েছে এবং ওই অঞ্চলের ওপর দিয়ে করিডর নির্মাণ দেশটির নিজস্ব ব্যাপার। তাই চীন ও পাকিস্তান মনে করে এ করিডরের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার ভারতের নেই।

বিশ্লেষকদের মতে, সব মিলিয়ে দুই দেশের এই অর্থনৈতিক প্রকল্প যেমন একদিক দিয়ে এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণ করবে। তেমনি এশিয়ার এই অঞ্চলের সঙ্গে পরাশক্তিধর দেশগুলোর সম্পর্ক নির্ধারিত হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads