• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
ইউক্রেনের জাহাজ আটক করলো রাশিয়া : উত্তেজনা চরমে

রাশিয়ার জলসীমায় প্রবেশ করার অভিযোগে ইউক্রেনের জাহাজ আটক করেছে রুশ নৌবাহিনী

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

ইউক্রেনের জাহাজ আটক করলো রাশিয়া : উত্তেজনা চরমে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৬ নভেম্বর ২০১৮

ক্রিমিয়া উপদ্বীপে রাশিয়া ইউক্রেনের নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ আটক করেছে । এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নিয়েছে। জাহাজগুলো আটকের সময় রাশিয়ার নৌবাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় দু’টো দেশই একে-অন্যকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে । ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পোরোশেংকো বলেছেন, এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি পার্লামেন্টে সোমবার সামরিক আইন জারির ঘোষণার জন্য আহ্বান জানাবেন।

বিবিসি জানায়, সংকটের শুরু হয় যখন রাশিয়া অভিযোগ তোলে যে, ইউক্রেনের জাহাজ রুশ সীমানায় ঢুকে পড়েছে। রুশ-বাহিনী সাগরে যেখানে দু’দেশের অংশীদারিত্ব আছে সেখানে কের্চ স্ট্রেইট সেতুর নিচে ট্যাংকার স্থাপন করেছিল। ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের মিটিং এর সময় প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পোরেশেঙ্কো রাশিয়ার এহেন আচরণকে ‘বিনা উসকানিতে এবং উন্মত্ত’ বলে বর্ণনা করেন।

কৃষ্ণ সাগরে এবং ক্রিমিয়ান উপকূলে আজোভ সাগরে উত্তেজনা সম্প্রতি বেড়েছে। ভোরে ইউক্রেনের বারডিযানস্ক এবং নিকোপল যুদ্ধজাহাজ এবং দি ইয়ানা কাপা জাহাজ কৃষ্ণ সাগরের ওডিসি বন্দর থেকে রওনা হয় আযোভ সাগরের মারিউপোলের উদ্দেশ্যে । ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া জাহাজের পথ আটকাতে চেষ্টা করে, যদিও এরপর নৌযানগুলো কের্চ স্ট্রেইটের উদ্দেশ্যে চলছিল কিন্তু ট্যাংকার দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়।

রাশিয়া ওই এলাকাতে দু’টো যুদ্ধবিমান এবং দু’টো হেলিকপ্টার তলব করে। তাদের অভিযোগ জাহাজগুলো অবৈধভাবে তাদের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল এবং ওই পথে চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে নিরাপত্তার কারণে। ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সদস্যরা জানান জাহাজ হামলা মুখে পড়লে তারা ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হামলায় তাদের ছয়জন নাবিক আহত হয়ে বলেও জানানো হয়।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা অবশ্য পরে নিশ্চিত করে যে, তাদের একটি টহল জাহাজ ইউক্রেনের তিনটি জাহাজকে জোর করে আটক করে। তবে তাদের দাবি কেবল তিনজন নাবিক আহত হয়েছেন। কয়েক মাস ধরেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল।

২০০৩ সালে চুক্তি অনুসারে মস্কো এবং কিয়েভকের্চ স্ট্রেট এবং আযোভ সাগরের আঞ্চলিক পানি ভাগাভাগি করবে। কিন্তু সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনের বন্দর হতে আসা বা তার উদ্দেশে যাত্রা করা সমস্ত নৌযান পরিদর্শন শুরু করে। রাশিয়ার শক্তি প্রয়োগ করে ইউক্রেনের নৌযান আটক করা, হতাহতের ঘটনা উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু মস্কো কখনো নিজের ঘাড়ে দোষ নেবে না। যখনই রাশিয়া শক্তি প্রয়োগ করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন সাফাই গেয়ে বলেছেন, ‘আমরা আগে শুরু করিনি’। এর প্রেক্ষাপটে ২০০৮ সালে রাশিয়া -জর্জিয়া যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়।

সুতরাং, রোববার যা ঘটেছে এবং সামনে যা ঘটতে যাচ্ছে তার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পোরোশেংকোর সরকারের উপর দোষারোপ করা হবে-মস্কোর কাছ থেকে এটাই অনুমেয়।

আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কের্চ স্ট্রেইট-এ চলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং ‘চরম সংযমের সাথে যেকোনো কাজ করার জন্য সবাইকে’ তাগিদ দিয়েছে। ন্যাটো বলেছে, তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে এবং এর আঞ্চলিক অখণ্ডতা, আঞ্চলিক জলসীমায় তার ন্যাভিগেশন অধিকারকে সমর্থন দেয়। ন্যাটো মনে করে, ইউক্রেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের অনুরোধ করেছে এবং মস্কোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি করেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads