• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ব্রিটেনে বাজিমাত সিলেটি মেয়ের

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

প্রবাস

ব্রিটেনে বাজিমাত সিলেটি মেয়ের

  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০২১

মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সিলেট

বয়স মাত্র ১২ বছর। অথচ বিশাল ব্যতিক্রমী এক বুদ্ধি নিয়ে ব্রিটেনে জন্মেছে সিলেটি বংশোদ্ভূত ইশাল মাহমুদ। মাত্র ১২ বছর বয়সে তার বুদ্ধিমত্তা, চিন্তাশক্তির প্রতিভা দ্যুতি ছড়াচ্ছে ব্রিটেনজুড়ে। ইশালের দাদার বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নে। তার বাবা ফরহাদ মাহমুদ (৪০) পেশায় একজন ট্যাক্সিচালক ও মা মমতাজ বেগম (৩৬) স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রকল্পে কাজ করেন। তবে তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সফলতার শিখরে নিয়ে গেছেন তার মামা এমরান হোসেন। ফলে টিভিতে যখনই দেখানো হয় ইশাল মাহমুদকে তখনই কোটি মানুষ বিস্ময়ের চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। ছোট্ট মেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে একের পর এক উত্তর দিয়ে যায়। সব মিলিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে ইশাল। সম্প্রতি টিভি শো ‘চাইল্ড জিনিয়াসে’ চূড়ান্ত পর্বে যে পাঁচ প্রতিযোগী তার মধ্যে ইশাল মাহমুদ অন্যতম। এই টিভি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাছাই হওয়ার কথা ব্রিটেনের সবচেয়ে ব্রাইট শিশু। সেখানে ইশাল বলেছে, সে অক্সফোর্ড অথবা ক্যামব্রিজে গণিত পড়ার পরে একজন জ্যোতির্বিদ হবে।

মা মমতাজ জাতীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রকল্পে কাজ করেন। কিন্তু ইশালকে গড়ে তোলার কাজে মন দেন তার মামা এমরান হোসেন। ইশালের সামান্য অবসর সময় পেলেই তার মধ্যে তথ্য ঢোকাতে থাকেন তিনি। তার কোনো ছেলেমেয়ে নেই। তাই তিনি প্রতিটি মুহূর্ত ভাগনি ইশালকে গড়ে তোলার কাজ করেন। স্কাইপ মাধ্যমে, সকালে নাস্তা খাওয়া থেকে সব সময়ই তিনি লেগে থাকেন। তাকে দিয়ে টিভিতে খবর দেখানো হয়। এমপিদের কাছে চিঠি লেখানো হয়। লেখানো হয় উপন্যাস।

ইশালের সহযোগী মামা এমরান হোসেনও কম মেধাবী নন। তিনি নিজেও ছিলেন চাইল্ড জিনিয়াস। তার সংগ্রহে রয়েছে ২৬টি জিসিএসই। সবগুলোতে শীর্ষ গ্রেড পেয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনো অক্সফোর্ডে মেডিসিন পড়ার জন্য একটি বৃত্তি ধরে রেখেছেন।

সাত বছর বয়সে প্রাইমারি স্কুলে পড়ালেখা শুরু ইশালের। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রাইমারি স্কুল শেষ করে, ব্রিটেনের বিখ্যাত ১০টি বোর্ডিং স্কুলে আবেদন করেছিল। সবগুলোতেই সুযোগ পায়। ইশালের মায়ের খুব ইচ্ছা ছিল মেয়েদের নামি বোর্ডিং স্কুল সেন্ট সুইথানস স্কুলে তার মেয়ে পড়ুক। উইনচেস্টারের সেন্ট সুইথানস স্কুল ইশালকে সম্পূর্ণ বৃত্তি দিয়ে তাদের স্কুলে পড়ার সুযোগ দেয়, তখন তার খুশি আর ধরে না। বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে তার এই সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে অনেক গর্বের বিষয়।

এত এত কাজ করছে, সম্মাননা স্বীকৃতিও কম জোটেনি ইশালের। তার ঝুলিতে জমা হয়েছে মুসলিম নিউজ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮, এরিক থমসন ট্রাস্ট অ্যাওয়ার্ড, রয়েল কলেজ অব অর্গানিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ফ্রেন্ডস অব মিউজিক ইন উইনচেস্টার অ্যাওয়ার্ড, দ্য রিগটসন ট্রাস্ট অ্যাওয়ার্ড, চেথহামস ইন্টারন্যাশনাল সামার স্কুল অ্যান্ড ফেস্টিভ্যালে পিয়ানো বাদক অ্যাওয়ার্ড। হ্যাম্পশায়ার ফাউন্ডেশনের ইয়াং মিউজিশিয়ান অ্যাওয়ার্ড। অর্জন করেছে হেড টিচার অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য সম্মাননা।

বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষা নিয়ে ইশাল বলে, বাংলা সব বুঝি, কিন্তু বলতে গেলে একটু ঝামেলা হয়। তবে বাংলাদেশ তার খুব পছন্দের জায়গা। দেশে গেলে শহরের বাসায় না থেকে বিয়ানীবাজারে দাদার বাড়িতে থাকতে পছন্দ করে। সেখানকার খোলামেলা পরিবেশ, মানুষের আন্তরিকতা তাকে টানে। বড় হয়ে বাংলাদেশের শিশুদের জন্য কাজ করতে চায় ইশাল।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads