• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাংলাদেশ

ভ্রমণকর প্রত্যাহারের দাবি

  • বেনাপোল প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ এপ্রিল ২০১৮

স্থলপথে ভারতে যাতায়াতকারী দেশি-বিদেশি যাত্রীরা আগামী বাজেটে ভ্রমণকর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। ভ্রমণকর পরিশোধের ক্ষেত্রে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে ভ্রমণকর ফাঁকির জন্য সক্রিয় রয়েছে একটি প্রতারক চক্র। অনিয়ম, হয়রানি ও ভ্রমণকর ফাঁকির জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে এখানে প্রতিনিয়ত। কাস্টম ও পুলিশের হাতে জাল ভ্রমণকরসহ বেশ কয়েকজন দালাল হাতেনাতে আটকও হয়েছে। তারপরও বেনাপোল চেকপোস্টে ভ্রমণকর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ কাস্টমস কর্মকর্তারা। চক্রটি এতই শক্তিশালী যে তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারাও হামলার শিকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলাও হয়েছে। কিন্তু বন্ধ করা যাচ্ছে না ভ্রমণকর ফাঁকি। আর ভ্রমণকর থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য নয়। ফাঁকি দেওয়া রোধে স্থলপথে ভ্রমণকর প্রত্যাহারের জন্য বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬-৭ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে যাতায়াত করে থাকেন। পূজা-পার্বণ ছাড়াও চিকিৎসা ও লেখাপড়ার কাজে বাংলাদেশ থেকে একটি বড় অংশ যাতায়াত করে। আর বিশ্ব ইজতেমার সময় কয়েক হাজার বিদেশি মেহমান আসেন টঙ্গীতে। অর্থিকভাবে সচ্ছল যাত্রীরা বেশিরভাগ বিমানযোগে যাতায়াত করেন। তবে নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যাতায়াত করেন স্থলপথে। ভ্রমণকর আইন ২০১৩, বিদেশ ভ্রমনকর হার নির্ধারণ বিধিমালা ২০১৪ আনুযায়ী বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের অধিক বয়সের পাসপোর্টধারী যাত্রীপ্রতি ৫০০ টাকা হারে ভ্রমণকর পরিশোধ করতে হয়। এরপর রয়েছে বন্দরের টার্মিনাল চার্জ বাবদ ৪৩ টাকা। দুই পারের ইমিগ্রেশনে রয়েছে বকশিশ। এসব কারণে হাঁপিয়ে উঠছেন সাধারণ পাসপোর্ট যাত্রীরা। ভ্রমণকরের কারণে অনেকেই চোরাইপথে যাতায়াত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ভারতীয় যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণকর আদায় করা হলেও ভারতে বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণকর নেওয়া হয় না। এ নিয়ে প্রায়ই ভারতীয় যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হতে দেখা যায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উওর ২৪ পরগনা জেলার পাসপোর্টধারী যাত্রী অরুণ সরকার ও স্বপন বিশ্বাস বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্কের কারণে ভারত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে ভ্রমণকর বাবদ কোনো টাকা নেয় না। সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছ থেকে কেন বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণকর নেবে সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা অবিলম্বে ভ্রমণকর তুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ঢাকার মনজুরুল হাসান ও আফজাল হোসেন বলেন, আমরা প্রায়ই চিকিৎসা করাতে ভারতে যাই। ভ্রমণকর আমাদের জন্য একটা বোঝা। এ কর কাটতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়। আবার ব্যাংক বুথে অতিরিক্ত ১০/২০ টাকা হারে চাঁদাও দিতে হয়। আমরা আগামী বাজেটে ভ্রমণকর প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার আ আ ম আমীমূল ইহসান বলেন, ভ্রমণকর প্রত্যাহারের জন্য আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চিঠি দিয়েছি। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে ভ্রমণকর ফাঁকির জন্য সক্রিয় রয়েছে একটি প্রতারক চক্র। অনিয়ম, হয়রানি ও ভ্রমণকর ফাঁকির জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতারক চক্রের হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads