• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
মাইলফলকে অর্থমন্ত্রী মুহিত

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

ছবি : সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ

মাইলফলকে অর্থমন্ত্রী মুহিত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ জুন ২০১৮

দশম জাতীয় সংসদে টানা ১০ বার অর্থমন্ত্রী হিসেবে জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ নিয়ে দ্বাদশবার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি। মুহিত ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন জেনারেল (অব.) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে। বিএনপি শাসনামলে ১০ বার বাজেট দিয়েছিলেন প্রয়াত এম সাইফুর রহমান। বিএনপি দুদফা ক্ষমতার মেয়াদে ১০ বার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ঘোষিত বাজেট তার জীবনের সর্বশেষ। দ্বাদশবারের মতো জাতীয় বাজেট পেশ করে তিনি এক্ষেত্রে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সমকক্ষতা অর্জন করলেন। তবে টানা ১০ বছর বাজেট প্রণয়নের কৃতিত্ব শুধু তারই রয়েছে। এই সময়টাকে মুহিত বলছেন, অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দশক।

সংসদে বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অভিযাত্রার রূপকল্প-২০৪১ প্রণয়নে আমি বয়সের কারণে হয়তো তেমন ভূমিকা রাখতে পারব না। তবে কাজ যে শুরু হয়েছে, তাতেই আমি খুব তৃপ্ত ও নিশ্চিত।

বাজেট উপস্থাপনের মাইলফলকের দিনে বাংলাদেশের খবরকে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, ‘আশা করছি অচিরেই আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হব। ব্যক্তিগতভাবে আমার গর্বের বিষয় হলো যে, বিগত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০ এর দশকে আমি ‘বিশ্ব ভিক্ষুক’ বলে অবহেলিত হলেও আজ সফল একজন অর্থমন্ত্রীর সম্মান পাচ্ছি।’ 

তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এ যাবৎ আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ এবং বিগত দুই বছর ধরে এর হার সাত শতাংশের ঊর্ধ্বে রয়েছে। আমরা এখন এই মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। এ ছাড়া একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০-এর খসড়াও আমরা তৈরি করেছি।

দ্রুততম সময়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের ঈর্ষণীয় সক্ষমতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।  বলেন, এই দশ বছরে উন্নয়নশীল অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি যখন পাঁচ দশমিক এক শতাংশ তখন আমাদের প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে চার দশমিক তিন শতাংশ থেকে আট দশমিক দুই শতাংশে। মাথাপিছু আয় বেড়ে ৭৫৯ মার্কিন ডলার থেকে এক হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলার হয়েছে। একই সময়ে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক তিন শতাংশ থেকে কমে পাঁচ দশমিক আট শতাংশ হয়েছে। রাজস্ব জিডিপির অনুপাতে বেড়ে নয় দশমিক দুই শতাংশ থেকে ১০ দশমিক তিন শতাংশে পৌঁছেছে। বাজেটের আয়তন ৮৯ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে চার লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এই ১০ বছরে বার্ষিক আমদানি ২২ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩২ দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাত দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২ দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার সাড়ে ৩১ শতাংশ থেকে ২৪ দশমিক তিন শতাংশে এবং হতদরিদ্রের হার ১৭ দশমিক ছয় শতাংশ থেকে ১২ দশমিক নয় শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের এক মাহেন্দ্রক্ষণে আমি এবারের বাজেট উপস্থাপন করছি, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর্যুপরি দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বশেষ বাজেট। আল্লাহর রহমতে আমি আমার ৮৫ বছর বয়সেও এই বাজেট প্রণয়নের মত একটি কঠিন কাজ করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু  জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশটি প্রতিষ্ঠা করে আমার মতো একজনকে দ্বাদশবারের মতো দেশের বাজেট প্রণয়নের সুযোগ করে দিয়েছেন। মন্ত্রী এ সময় ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ জনগণের অধিকার আদায়ের দাবিতে জীবন উৎসর্গকারীদেরও স্মরণ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads