• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
সৃষ্টিতেই বেঁচে থাকবেন গোলাম সারওয়ার

সাংবাদিকতার বাতিঘরখ্যাত সম্পাদক গোলাম সারওয়ার

সংরক্ষিত ছবি

বাংলাদেশ

নাগরিক শোকসভায় বক্তারা

সৃষ্টিতেই বেঁচে থাকবেন গোলাম সারওয়ার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ অক্টোবর ২০১৮

মাস দুই হলো চিরবিদায় নিয়েছেন সাংবাদিকতার বাতিঘরখ্যাত সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। শরীরের মৃত্যুতে তার জ্বেলে যাওয়া আলো নেভেনি। পার্থিব জীবনের কর্ম, নিষ্ঠা ও সততার সঞ্চয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছেন বিশ্বলোকে। মহাসিন্ধুর ওপার থেকে পথ দেখাচ্ছেন বাতিঘর। দেহাবসানে তার মৃত্যু হয়নি, বেঁচে আছেন সৃষ্টিশীলতায়। গতকাল শনিবার সমকালের প্রয়াত সম্পাদক গোলাম সারওয়ার স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোকসভার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনরা এ কথা বলেন। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শোকসভা থেকে গোলাম সারওয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। গত ১৩ আগস্ট সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় গোলাম সারওয়ারের।

গোলাম সারওয়ার স্মরণ পরিষদ আয়োজিত শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের আহ্বায়ক জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। গোলাম সারওয়ারের রচনা থেকে পাঠ করেন বাচিক শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, রুপা চক্রবর্তী ও অভিনেত্রী বন্যা মির্জা। গোলাম সারওয়ারে প্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শামা রহমান। পরিবারের পক্ষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গোলাম সরাওয়ারের ছোট ভাই গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন জামাতা মিয়া নঈম হাবিব।

মুস্তাফিজ শফি প্রারম্ভিক বক্তব্যে বলেন, গোলাম সারওয়ার জাতির অভিভাবকতুল্য মানুষ। তাকে হারিয়ে সবাই শোকাভিভূত। সৃষ্টিশীল মানুষের কখনো মৃত্যু নেই। গোলাম সারওয়ার এমনই একজন মানুষ। তার কাজ ও সৃষ্টির জন্য বহুদিন তিনি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, গোলাম সারওয়ার ছিলেন তার ছাত্র। ষাটের দশকের শুরুতে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের প্রতিনিধি হিসেবে তার সাংবাদিকতা শুরু হয়। এরপর নিজের নিষ্ঠা, মেধা ও শ্রমে হয়ে ওঠে দেশের শীর্ষস্থানীয় সম্পাদক। দৈনিক ইত্তেফাকের দীর্ঘ সময়ের বার্তা সম্পাদক, তারপর দৈনিক যুগান্তর ও সমকালের মতো পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। গোলাম সারওয়ারের আলোয় আরো বহু বছর ধরে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আলোকিত হবে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, একজন পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন গোলাম সারওয়ার। একজন সফল সংগঠক, দলনেতা ও বন্ধু ছিলেন। তাকে হারিয়ে এখন একা মনে হয়। তাকে অনেকবার বলতাম, দিনে একবার এসে দেখিয়ে দিয়ে চলে যান। কিন্তু তিনি সমকালেই দিনের সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করতেন। অসুস্থ হলেও কখনো জানাতেন না। বার্তাকক্ষই তার প্রিয় জায়গা ছিল।

দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিক আবেদ খানের মূল্যায়ন একুশে পদকপ্রাপ্ত গোলাম সারওয়ারের কর্মপটুতা ছিল ঈর্ষণীয়। আবেদ খান বলেন, সংবাদে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে জানতেন গোলাম সারওয়ার। তিনি জানতেন পাঠক কখন কী পড়তে চায়। জানতেন বলেই যুগান্তরের পর সমকালের মতো পাঠপ্রিয় পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি গোলাম সারওয়ারের ভালোবাসা ছিল তীব্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তিনি ছিলেন উদ্ভাসিত।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, নাট্যজন সৈয়দ হাসান ইমাম, কলামিস্ট আবুল মকসুদ, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, কূটনৈতিক প্রাবন্ধিক ইনাম আহমেদ চৌধুরী, নাট্যজন আতাউর রহমান, কবি হেলাল হাফিজ, কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, একুশে টিভির প্রধান সম্পাদক নির্বাহী মনজুরুল আহসান বুলবুল, এইচএসবিসি বাংলাদেশের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, বিচারপিত শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, কবি কাজী রোজী এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কবি মুহাম্মদ সামাদ, সৈয়দ আনোয়ারা হক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যপস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনউদ্দিন প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads