• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর যেন মৃত্যুফাঁদ

চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবেশমুখ শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর যেন মৃত্যুফাঁদ

  • শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
  • প্রকাশিত ০৯ জুন ২০১৮

সাক্ষাৎ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবেশমুখ শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর। প্রায়ই সেখানে ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা, গোলচত্বরের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে একের পর এক ঝরছে প্রাণ। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাকায় প্রাণ হারিয়েছেন এক রিকশাচালক ও তিন পথচারী।

দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা সবগুলো যানবাহনই চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করে শাহ আমানত সেতু হয়ে। এ ছাড়া নগরীর ১৯টি রুটের বাস, টেম্পু, হিউম্যান হলার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের শত শত গাড়ি চলাচল করে এ চত্বর হয়ে। গাড়ির তুলনায় সড়কের পরিধি কম হওয়ার কারণে নিত্য যানজট লেগেই থাকে এখানে। অন্যদিকে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাবে মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতা চলে এই গোলচত্বরের চারপাশে।

সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, শাহ আমানত সেতু থেকে বশরুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত সড়ক মুখ, ডিভাইডার, গোলচত্বর ইত্যাদিতে বেশ কিছু নির্মাণ ত্রুটি রয়েছে, যা সেখানে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব ত্রুটি সারানোর জন্য জন্য ট্রাফিক বিভাগ থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে গোলচত্বরটিকে আরো ছোট করা, সড়কের সরু মুখ আরো সম্প্রসারণ করা, ডিভাইডারের আকার কমানোসহ বিভিন্ন সুপারিশ ছিল। কিন্তু ট্রাফিক বিভাগের এ সুপারিশ কার্যকর হয়নি। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমেনি সেখানে।

গত কয়েক বছরে শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বরে বেশ কিছু মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে সেতুর দিক থেকে নেমে আসা বাস-ট্রাকের বেপরোয়া গতির কারণে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনানুযায়ী, সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার দ্রুতগতির সিমেন্টবাহী ট্রাকটিও শাহ আমানত সেতুর দিক থেকে নিচের দিকে নেমে আসছিল বেপরোয়া গতিতে। গোলচত্বরের ঠিক আগে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো রিকশা, টেক্সি ও পথচারীদের চাপা দিয়ে চলে যায় ট্রাকটি। চোখের পলকেই সেখানে ঝরে পড়ে চারটি তাজা প্রাণ। গত বছর ২২ মার্চে একই স্থানে একটি দ্রুতগতি ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান স্কুলশিক্ষিকা শাকেরা বেগম (৪৭)। তিনি ছিলেন পটিয়া উপজেলার উত্তর দেয়াং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। প্রায় প্রতি মাসেই এ ধরনের একাধিক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে এই স্পটটিতে।

স্থানীয়দের মতে, ট্রাফিক সার্জেন্টসহ অন্যান্য ট্রাফিক সদস্য চত্বরে নিয়মিত ডিউটিতে থাকেন। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে সেখানে যানবাহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে চালকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের দিকেই তাদের ঝোঁকটা বেশি থাকে। যে কারণে সেখানে যানচালকরা কোনো ধরনের আইন-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। চালকদের এই বেপরোয়া মনোভাব ও ট্রাফিক বিভাগের উদাসীনতার ফলেই ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads