• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
'বিনা পয়সায় আর নয়, সব মহাসড়কে টোল দিতে হবে'

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

'বিনা পয়সায় আর নয়, সব মহাসড়কে টোল দিতে হবে'

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, ঢাকা-সিলেট চার লেনে আর বিনা পয়সায় সেবা দেওয়া হবে না। এ সড়কে চলাচল করা যানবাহনকে টোল দিতে হবে। আমরা সেবা চাই কিন্তু পয়সা দিতে রাজি না, এটা আমাদের কালচার। এখান থেকে বের হতে হবে। বিনা পয়সায় সেবার দিন শেষ।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। বর্তমানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ঢাকা-সিলেটের ২০৯ দশমিক ৩২ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে উন্নয়ন সহযোগীর সন্ধানে ছিল সরকার। প্রকল্পের ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে এডিবি। মোট ব্যয় ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাকি ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা সরকারিখাত থেকে মেটানো হবে। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাস্তবায়িত হবে।

এদিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণসহ একনেকে প্রায় ১৯ হাজার ৮৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত ৯টি প্রকল্পের  অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের সভায় এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘বিটিসিএলের ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প; তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ডিজিটািল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন ১ম সংশোধিত) প্রকল্প’, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘পশ্চিম গোপালগঞ্জ সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (১ম পর্যায়) প্রকল্প’, ‘চট্টগ্রাম জেলাধীন হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প’ এবং ‘ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলাধীন দৌলতখান পৌরসভা ও চকিঘাট এবং অন্যান্য অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা প্রকল্প’, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’ এবং ‘অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্প’।

একনেক সভার বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ঢাকা-সিলেট চারলেন প্রকল্পের টাকা উঠে আসবে কারণ এই সড়কে টোল আদায় করা হবে। সব মহাসড়কে টোল আদায় করা হবে। 

প্রতি কিলোমিটারে ৮১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যা ব্যয় হওয়ার তাই হচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়ছে। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে, নির্মাণ করা হবে ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস। ৫ কিলোমিটার উড়াল সড়ক থাকবে এসব কারণেই মূলত ব্যয় বাড়ছে। তিনি বলেন, সড়ক থেকে ইকোনোমিক্যালি রিটার্ন আসবে। তাই ভালো কিছু পেতে হলে দাম দিতে হবে। ছোট মন দিয়ে বড় কাজ হয় না। আমাদের সরকারের মন বড়। সরকার বড় মন নিয়ে দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করতে উন্নয়ন করছে।

মন্ত্রী জানান, সড়কের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে সরকার প্রধান নির্দেশ দিয়েছেন। কাজুবাদামের চারা যেন নিজেরা উৎপাদন করতে পারি সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন’। এ ছাড়া আগামী একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দরের সামগ্রিক পরিকল্পনা বা মাস্টারপ্ল্যান জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads