• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
 পদ্মা সেতু চালু হলে শরীয়তপুরে বাড়বে বিসিকের উৎপাদন

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

পদ্মা সেতু চালু হলে শরীয়তপুরে বাড়বে বিসিকের উৎপাদন

  • শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৮ জুন ২০২২

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। আর মাত্র ৮ দিন বাকি। এ ঘোষণার পর থেকেই শরীয়তপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উদ্যোক্তারা ঢাকামুখী উৎপাদনের জন্য কাজ শুরু করেছেন।

তারা বলছেন, শরীয়তপুরের বিসিক শিল্পনগরীতে ২৩ বছরের কাঙ্ক্ষিত কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখন পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার খবরে তারা নতুন পণ্য উৎপাদন করতে শুরু করেছেন।

শরীয়তপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৯৫ কিলোমিটার। পদ্মা নদী থাকায় সরাসরি গাড়িতে করে ঢাকা যাওয়া যায় না। ফেরিতে পার হয়ে ঢাকা যেতে হয়।এতে দীর্ঘ সময় ফেরি পারাপারের জন্য বসে থাকতে হয়। এজন্য বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ঢাকায় পাঠাতেন না। তারা শরীয়তপুরের বাজারে পণ্য পাঠাতেন। তাদের যেমন লাভ হওয়ার কথা, তেমন হতো না। অনেক সময় লোসকানের পাল্লা ভাড়ি হতো।
এখন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে আশার আলো দেখছেন শরীয়তপুর বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তারা। নতুন করে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করতে শুরু করেছেন তারা। এতে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। উৎপাদিত পণ্য রাজধানী ঢাকার বাজারে প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক শরীয়তপুরে বিসিকের জন্য জায়গা নির্ধারণ করেন। তার এই উদ্যোগে প্রায় ১৪ একর জমির ওপর বিসিক শিল্পনগরীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০১ সালের ১০ জুলাই শিল্পনগরীর উদ্বোধন করা হয়। শিল্পনগরীতে ১০০ প্লট রয়েছে। এই শিল্পনগরীতে ৫৯টি ইউনিট রয়েছে। সবকটি ইউনিটে ছোট বড় প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য তৈরির কাজ করছে।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শরীয়তপুরের সঙ্গে ঢাকা বা অন্য জায়গার যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। রাস্তা কম হলেও দীর্ঘ সময় নদী পাড় হওয়ার জন্য বসে থাকতে হয়। কখনো কখনো এক দিন থেকে তিন দিনও কেটে যেত নদী পাড় হতে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। সেতু উদ্বোধনের খবরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে জেলার মানুষ। নতুন করে বিসিক শিল্পনগরীকে ঢেলে সাজাতে শুরু করেছেন উদ্যোক্তারা। এখানকার উৎপাদিত পণ্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণ করছেন ব্যবসায়ীরা।

উদ্যোক্তা করিম সরদার বলেন, আগে শরীয়তপুর বাজার ছাড়া অন্য বাজারে আমাদের উৎপাদিত পণ্য পাঠাতে পারতাম না। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু খুললে আমরা আমাদের পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে পারব। এতে করে যেমন উৎপাদন বাড়বে তেমনি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।

তালুকদার ফুড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কর্মকর্তা লিয়ন তালুকদার বলেন, আমাদের এখানে চাল, আটা, ময়দা এ ধরনের খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন হয। পরিবহনের সমস্যার কারণে আমরা ঢাকার বাজার ধরতে পারি না। শুধুমাত্র শরীয়তপুরের বাজারের ওপরে নির্ভর হয়ে থাকতে হতো। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর ঢাকার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় আমাদের পণ্য পাঠাতে পারব।

শরীয়তপুর বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা অর্ক সরকার বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার শুরু হলে এই শিল্পনগরীর গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে। উদ্যোক্তারা নতুন আঙ্গিকে উৎপাদন করার জন্য কাজ করছেন। এতে বিসিকে অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads