যশোর পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত বেনাপোলের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বাদশা মল্লিককে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। গত রোববার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার পুলিশ কালুপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশি বন্দুক ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
ভারতীয় পুলিশের দাবি, বাদশা এক বছর আগে চোরাপথে ভারতে পালিয়ে আসে। কালুপুর এলাকায় এক তরুণীকে বিয়ে করে নাম পাল্টে সেখানেই থেকে যায়। তাকে বনগাঁ আদালতের মাধ্যমে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বিচারক তাকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কে এই বাদশা মল্লিক
সীমান্তবর্তী বেনাপোল পোর্ট থানার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত কেরামত মল্লিকের ছেলে বাদশা। সে ফেনসিডিল চোরাচালানের অন্যতম হোতা বলে পরিচিত। র্যাবসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক মাদক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বাদশা ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পরে তিনি স্থানীয় এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন। বছর দুয়েক আগে তিনি এমপিকে ত্যাগ করে প্রতিদ্বন্দ্বী বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের পক্ষে ভিড়ে যান। ঢাকার রমনা থানার একটি ছিনতাই মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানায় যশোর ডিবি পুলিশ ২০১৬ সালের ৩১ মে রাতে তাকে আটক করে। ওই মামলায় জামিনের পর তিনি আবার এমপির দলে ঢুকে যান।
নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেনকে বেনাপোল সীমান্তের চোরাপথে ভারতে পালাতে এই বাদশাই সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর কিছুদিনের জন্য গা ঢাকা দেওয়ার পর আবার ফিরে আসেন এলাকায়। নূর হোসেনের সঙ্গে তার যোগাযোগ মূলত ফেনসিডিল চোরাচালানের সূত্র ধরে।
যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, বাদশা মাদক সম্রাট। তাকে আটক করায় প্রভাবশালী একটি মহল নাখোশ হয়েছিল। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার পরপরই সে পালিয়ে যায়।
২০১৭ সালের ২৪ মে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার। এই তালিকার ১৩ নম্বরে নাম ছিল বাদশা মল্লিকের।