• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
১৫ লাখ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে তিন লাখ মামলা

বিএনপি লোগো

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

১৫ লাখ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে তিন লাখ মামলা

মামলায় ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন ইসহাক সরকারের, ডবল সেঞ্চুরি আমান ও নীরবের, সেঞ্চুরি তারেক রহমানের

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০১৮

রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। এতে অন্তত ১৮ লাখ নেতাকর্মী আসামি হয়েছেন। বাংলাদেশের খবরকে এমনটাই জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে এখন পুলিশ ও আদালতের ওপর ভর করেছে। দলের প্রধান খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে এখন জামিন ঠেকাতে আদালতের আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি অসুস্থ হলেও চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১৩০টি এবং তার নিজের বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৭টি মামলা।

খালেদার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, মামলার কারণে তিনিসহ দলের নেতাকর্মীদের দিন শুরু হয় আদালতে হাজিরা দিয়ে। সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিদিনই কাটে আদালতে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বছরের পর বছর কারাগারে থেকে রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপির কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্যে নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, শ্রমিক দল নেতা বিএম বাকির হোসেন রয়েছেন। এ ছাড়া মামলার খড়্গ মাথায় নিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ। হান্নান শাহ আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার পথে জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় গাড়িতে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৩০০ পেরিয়েছে। যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ২৭৯ মামলার আসামি। ২০০ পেরিয়েছে খালেদার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমান উল্লাহ আমানের মামলা। ২০০-এর কাছাকাছি আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। ১০০ মামলার কোটায় আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ও মহানগর নেতা হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ।  

অর্ধ শতাধিক মামলার আসামির তালিকায় আছেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক নবী উল্লাহ নবী,  ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রফেসর আবদুল মান্নান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এম মোরশেদ খান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, শওকত মাহমুদ, মো. শাহজাহান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, মিজানুর রহমান মিনু, তৈমূর আলম খন্দকার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান প্রমুখ। ৫ থেকে ১০টি মামলা নেই এমন কোনো কেন্দ্রীয় নেতা এখন বিএনপিতে নেই।

মহিলা দলের নেত্রী ও সাবেক এমপি সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, শিরিন সুলতানা, সুলতানা আহমেদ ও আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। 

ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের বিরুদ্ধে ১০৭টি, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের বিরুদ্ধে ৮০টি, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুনের বিরুদ্ধে ২৫টি ও দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী ও নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, মামলা দায়েরের সময় যেসব ধারা উল্লেখ করা হয় চার্জশিটের সময় আলাদা আইনে বিভক্ত হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো নতুন মামলা। সেক্ষেত্রে নেতাদের বিরুদ্ধে  মামলা বেড়ে দেড় গুণ হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads