• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
সয়াবিন সোডা চিনি ও লবণে তৈরি হয় দুধ

ভেজাল দুধ উৎপাদন কারখানায় তল্লাশি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

সয়াবিন সোডা চিনি ও লবণে তৈরি হয় দুধ

সিরাজগঞ্জে আকিজের কারখানা সিলগালা

  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৬ জুন ২০১৮

ভেজাল দুধ উৎপাদন ও বাজারে বিক্রির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গতকাল সোমবার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত দলের সাত সদস্য সরেজমিন ভেজাল দুধ তৈরির বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। প্রত্যক্ষ শেষে তদন্ত দল উল্লাপাড়ার মোহনপুর এলাকার বিভিন্ন দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় আকিজ দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্র সিলগালা করে দেয়। উৎপাদিত ভেজাল দুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে যান তারা।

বেশ কিছুদিন আগে থেকেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বিভিন্ন স্থানে ভেজাল দুধ তৈরি হচ্ছে। এই দুধ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ নিয়ে গত এপ্রিল মাসে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচিত ও সমালোচিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গত ১৫ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ইকবাল রউফকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটির ৭ জন সদস্য সরেজমিন গতকাল সোমবার উল্লাপাড়ায় তদন্তে আসেন।

তদন্ত দলের সদস্যরা উল্লাপাড়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে ভেজাল দুধ উৎপাদন প্রক্রিয়া সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন। কীভাবে নানা উপকরণ দিয়ে এই ভেজাল দুধ উৎপাদন করা হচ্ছে তা দেখানো হয়। এতে পরিমিত গরুর দুধ, সয়াবিন তেল, সোডিয়াম কার্বোনেট (সোডা), চিনি, লবণ ও স্বল্প পরিমাণে ডিটারজেন্ট দিয়ে ব্লেন্ডার মেশিনে মিশ্রণ করে দুধ তৈরি করা হয়। উৎপাদিত ভেজাল দুধে পরীক্ষা করে চর্বিসহ বিভিন্ন উপকরণও সঠিক পরিলক্ষিত হয়। স্থানীয় সেনেটারি পরিদর্শক, উপজেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

দুধ তৈরি দেখার পর তদন্ত দলের সদস্যরা উপজেলার মোহনপুর এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র (সংগ্রহ কেন্দ্র) পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে দুধ পরীক্ষার কাজে ব্যবহূত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় আকিজ দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্রটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত দলের সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানান, তদন্ত দলের সদস্যরা মিল্কভিটা, প্রাণ, ব্র্যাক, আকিজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিকালে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে নানা অনিয়মের অভিযোগে আকিজ দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্রটি বন্ধ করার পর প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত দল প্রধান ইকবাল রউফ জানান, সরেজমিন দেখার জন্য তদন্ত দলের সদস্যদের নিয়ে এই এলাকায় এসেছি। ভেজাল দুধ উৎপাদন প্রত্যক্ষ করেছি। এই উৎপাদিত দুধ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কি না সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads