চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাবেই মৃত্যু হয়েছে শিশু রাইফার। এমনটিই বেরিয়ে এসেছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু রাফিদা খান রাইফা যখন তীব্র খিচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। ওই সময়ে উপস্থিত থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই ছিল না তাদের। ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে রাইফার অভিভাবকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।
তদন্তে স্পষ্ট হয় যে, হাসপাতালে রোগী ভর্তি প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। তাছাড়াও হাসপাতালে চিকিৎসক নার্সদের সেবা প্রদানের সমন্বয়হীনতা ও চিকিৎসাকালীন মনিটরিংয়ের অভাব। অদক্ষ নার্স ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে কাঙ্খিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, বিশেষত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবায় বিশেষজ্ঞের সার্বক্ষণিক উপস্থিতির সংকটটি প্রবল। কর্তব্যরত নার্সদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিপ্লোমাধারী থাকার নিয়ম থাকলেও উক্ত হাসপাতালে তা নেই।
প্রতিবেদনে কমিটির চারটি সুপারিশও প্রদান করে। ১. সেগুলো হল, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা ২. ম্যাক্স হাসপাতালের সার্বিক ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অতিদ্রুত সংশোধন করা ৩. ডিপ্লোমা নার্স দ্বারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা ৪. হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক দ্রুত ও আন্তরিক সেবা সুনিশ্চিত করা এবং ৫. রোগীর অভিভাবককে যথাসময়ে রোগীর অবস্থা ও চিকিৎসার ব্যাপারে সর্বশেষ পরিস্থিতি বগত করা।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নের্তৃত্বে গঠিত এ তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ।