• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
দেশেই আছেন মেজর জিয়া

জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক শাখার প্রধান মেজর জিয়া

ছবি: সংগৃহীত

অপরাধ

দেশেই আছেন মেজর জিয়া

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই ২০১৮

দেশেই অবস্থান করছেন জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক শাখার প্রধান মেজর জিয়া। তবে নিষ্ক্রিয় থাকায় তার সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করতে পারছেন না গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা। সর্বশেষ সাভার ও চট্টগ্রামে তার অবস্থানের সংবাদ পেলেও ধরা সম্ভব হয়নি।

জিয়াকে ধরতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিট ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাকে ধরতে নিয়মিত ফাঁদও ফেলেন গোয়েন্দা সদস্যরা। কিন্তু এখনো অধরা রয়ে গেছেন একসময় সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে কাজ করা এই শীর্ষ জঙ্গি। গোয়েন্দা সদস্যরা জানান, নেটওয়ার্ক, সোর্স, কমান্ড, ট্রেনিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকায় মেজর জিয়াকে ধরতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। ধূর্ত এই জঙ্গি সচরাচর কোনো ফাঁদে পা দেন না। বর্তমানে তিনি শুধু একেবারে কাছের কিছু লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছেন।

অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি সফিকুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে মুঠোফোনে বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে আমরা সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি, মেজর জিয়া সাভারে অবস্থান করছেন। আমরা সেখানে অভিযান চালাই। কিন্তু আমরা পৌঁছার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি সেখান থেকে চলে যান। তবে মেজর জিয়া যে ওই স্থানে ছিলেন তা আমরা টের পেয়েছি।’

গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে এবিটির গোয়েন্দা শাখার প্রধান জুবায়েরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৩ সালে এবিটিতে যোগ দেওয়া জুবায়ের সংগঠনটির গোয়েন্দা শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংগঠনে তিনি শেখ আবদুল্লাহ, জায়েদ, জাবেদ, আবু ওমায়ের নামেও পরিচিত। সংগঠনটির তহবিলের দেখভালও করতেন তিনি। ছয় মাস আগেও চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকার জাকির হোসেন রোডের বাসায় মেজর জিয়া ছিলেন বলে জুবায়ের পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জুবায়ের জানেন না বলেও জানিয়েছে পুলিশকে।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘জিয়া যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি ধরা পড়বেন। তিনি নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বলে তার অবস্থান শনাক্ত করা ডিফিকাল্ট হচ্ছে। নেটওয়ার্ক এমনভাবে সেট করা হয়েছে। তিনি নড়াচড়া করলেই ফাঁদে আটকা পড়বেন।’

জিয়ার পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক। তার বাবার নাম সৈয়দ মোহাম্মদ জিল্লালুল হক। গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে। সর্বশেষ তিনি মিরপুর সেনানিবাসে থাকতেন। ২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি সেনা সদর দফতরের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়। ওই অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে মেজর জিয়া অন্যতম। এরপরই সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গিয়ে ২০১২ সালে জিয়া আনসার আল ইসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে ২০-২৫টি স্লিপার সেল গঠন করে বেশ কয়েকজন ব্লগার হত্যার ঘটনায় পরিকল্পনাকারী হিসেবে উঠে আসে তার নাম। গত বছরের ২ আগস্ট তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads