• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ভোটের দুদিন আগে নাশকতা!

বুলবুলের কল রেকর্ড ফাঁস, ২৮ ডিসেম্বর সারা দেশে নাশকতার পরিকল্পনা বিএনপির

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

বিএনপি নেতা বুলবুলের অডিও ফাঁস

ভোটের দুদিন আগে নাশকতা!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই রাজনীতির অন্ধকার দিক উন্মোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের একের পর এক ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় নানা ধরনের শঙ্কা বাড়ছে। এরই মধ্যে সারা দেশে একজন বিভাগীয় কমিশনার, চার জেলা প্রশাসক ও এক পুলিশ সুপারকে হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সবশেষ গতকাল শনিবার রাজশাহীতে বিএনপি নেতা বুলবুলের ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অডিওটিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বলতে শোনা গেছে, নির্বাচনের দু’দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর সারা দেশে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বিএনপি। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের খবর নিজস্ব অনুসন্ধান চালিয়ে এর সত্যাসত্য নিশ্চিত করতে পারেনি। এমনকি অডিও সম্পর্কে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কোনো বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।  

ফেসবুক ঘেঁটে জানা গেছে, কল রেকর্ডটি ফাঁস করে দিয়েছেন বুলবুলেরই ভাগিনা মাসুদ। ওই কথোপকথনে মাসুদকে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ২৮ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী নাশকতা সৃষ্টির জন্য বিএনপির তৃণমূল নেতাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ফোনালাপে ভাগিনা তার মামার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করার পর নির্বাচনকেন্দ্রিক দলীয় নির্দেশনা জানতে চাইলে বুলবুল লাঠিসোটা-অস্ত্রশস্ত্র প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেন। তিনি এও বলেন, ২৮ ডিসেম্বরের পর এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হবে, যা কল্পনাতীত। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দিতে সাবেক এই মেয়র বলেন, হয় বাংলাদেশ থাকবে, নইলে ইনশাল্লাহ দেশই ডিভাইড (বিভক্ত) হয়ে যাবে। বুলবুল ২৮ ডিসেম্বর থেকে ওই নাশকতা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন। এদিকে একের পর এক বিএনপি নেতাদের ফোনালাপে নাশকতা পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ এবং আতঙ্ক প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর ফোনালাপটি বেশ উদ্বেগজনক। বোঝা যাচ্ছে, দেশব্যাপী বড় ধরনের নাশকতা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে দলটি। জনগণের জানমাল রক্ষায় তাদের এ পরিকল্পনা রুখে দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠ ছাড়ছে না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ২৫টি আসনে ধানের শীষে প্রার্থী হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় থেকে জেলা নেতারা। আর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে ভোটের মাঠে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে দলটি। এ লক্ষ্যে তাদের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকেও মাঠে নামানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত অধ্যুষিত এলাকায় কেন্দ্রভিত্তিক আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে জামায়াত-শিবির। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০-দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চাপে জামায়াতকে গুরুত্ব না দেয় তাহলে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এজন্য তারা চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, খুলনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলার অর্ধশতাধিক আসনকে নিজেদের ‘ভোটব্যাংক’ বিবেচনা করে হিসাব কষছে।

এদিকে ভোটের মাঠে সুবিধা করতে না পারলে জামায়াত-শিবির গোপনে নাশকতার ছক কষছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত অক্টোবর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে গোপনে বৈঠক ও নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের কয়েকশ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে যেভাবে ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল, তার চেয়েও ভয়াবহ নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।

ডিএমপির সূত্র মতে, গত কয়েক বছরে দায়ের হওয়া কমবেশি ৮০০ নাশকতার মামলার মধ্যে অন্তত ৫০০টিতে শিবিরের নেতাকর্মীরা আসামি। এসব মামলার আসামি ধরতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads