• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯
কী হবে নেপথ্য গডফাদারদের

দেশজুড়ে মাদক কারবারীদের শক্ত নেটওয়ার্ক

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

দেশজুড়ে মাদক কারবার

কী হবে নেপথ্য গডফাদারদের

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আত্মসমর্পণকারী মাদক কারবারিদের মাঠপর্যায়ের পুলিশ সহযোগিতা না করে নিপীড়ন করে থাকে। এমন তথ্য পাওয়া গেছে অনুসন্ধানে। ফলে সরকারের আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।

সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ ও বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাদক কারবারিদের আত্মসমর্পণের পাশাপাশি এদের নেপথ্যের সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও তালিকা প্রকাশ করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই মাদক নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত হবে।

চলতি মাসে কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারে ইয়াবার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি আছে ৩৪ জন। যাদের বেশিরভাগের বসবাস সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে।

সূত্র জানায়, আত্মসমর্পণের এ প্রক্রিয়াকে সফল করতে গত এক মাস ধরে মাঠে কাজ করছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি দল। ইতোমধ্যে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশের এই বিশেষ দলের হেফাজতে চলে এসেছে। গত ২ বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের আহ্বানে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার ২ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এরপর ওই আত্মসমর্পণকারীরা নিজের মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠে। উপরন্তু কোথাও কোথাও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশও আত্মসমর্পণকারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে। আত্মসমর্পণ করে বেকায়দায় পড়া এসব মাদক ব্যবসায়ী অবশেষে নিজেদের সহায়সম্বল বিক্রি করে অসাধু পুলিশ সদস্যদের চাহিদা মেটাতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি রেজাউল করিম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, এ রকম হওয়ার কথা নয়। যারা পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করে, তাদের স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া পুলিশেরই নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময় চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণ করলে সরকার তাদেরকে আনসার বাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়। খুলনার বনদস্যুরা আত্মসমর্পণের পর চাকরি দেওয়াসহ নানাভাবে সহায়তা করেছে সরকার। তারা এখন স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।

তিনি আরো বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের নিপীড়ন বা হয়রানি করা হচ্ছে, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে-আত্মসমর্পণ তারই অংশ। কিন্তু শুধু মাদক কারবারিদের আত্মসমর্পণ কেন। এর নেপথ্যের রাজনৈতিক নেতা, গডফাদার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু সদস্য যারা নিজেরাও মাদক ব্যবসা করে এবং করায় তারা কোথায়?’ তাদের তালিকা প্রকাশ করা হোক। এসব নেপথ্য নায়কের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করা হোক। শুধু তাই নয়, আত্মসমর্পণের পর অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তার পরিবর্তে অসাধু পুলিশ সদস্যরা হয়রানি করে থাকে। এ রকম অভিযোগ বিস্তর আছে। তাদের বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সে সম্পর্কেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বা সরকারকে পরিচ্ছন্ন ধারণা দেওয়া দরকার।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads