• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করলেন দুই আসামি

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করলেন দুই আসামি

  • বরগুনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৯

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল  সোমবার বিকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে স্বেচ্ছায় তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এদিকে মামলার দুই প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন (নয়ন বন্ড) ও রিফাত ফরাজির বিরুদ্ধে এবার ল্যাপটপ ছিনতাইচেষ্টা এবং শারীরিকভাবে জখম ও হুমকি দেওয়ার পৃথক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নাহিদ হোসেন এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজির মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজির নেতৃত্বে ৫-৬ জন সন্ত্রাসী বরগুনার চরকলোনি এলাকার আক্তারুজ্জামান নাসিরের ছেলে জিহাদ জামানের কাছ থেকে ল্যাপটপ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ল্যাপটপটি ভেঙে গেলে সন্ত্রাসীরা আছাড় মেরে তা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেয় এবং জিহাদ জামানকে মারধর করে। এরপর জিহাদের বাবা আক্তারুজ্জামান নাসির বাদী হয়ে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজি ও অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় গতকাল সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া দুজন হলেন এ মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর। পরে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়ে তিন দিন রিমান্ড শেষে নাজমুল হাসানকে একই আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত তার পাঁচ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সাগর ও সাইমুন নামের অপর দুজনকে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালত এ আদেশ দেন। আদেশ শুনে আদালত প্রাঙ্গণে থাকা রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি অলি ও হত্যাকাণ্ডেরর ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করা তানভীর আদালতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা সাগর, সাইমুন ও নাজমুল আহসানকে ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদের মধ্যে নাজমুল আহসান আগেও তিন দিনের রিমান্ডে ছিল। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল আবারো তার ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। তিনি আরো বলেন, এ মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হূদয় গ্রেপ্তার হলেও তিনি বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌঁছায়নি। তাই তাকে আদালতে তোলা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজিসহ আরো দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাতকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads