• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
হিজড়াদের বিড়ম্বনায় ঢাকা-সিলেটের আন্তনগর ট্রেনের যাত্রীরা

আন্তনগর ট্রেনে হিজড়াদের চাঁদাবাজি

ছবি: বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

হিজড়াদের বিড়ম্বনায় ঢাকা-সিলেটের আন্তনগর ট্রেনের যাত্রীরা

  • জিয়াউল হক জিয়া, কুলাউড়া
  • প্রকাশিত ০৪ জুলাই ২০১৯

কুলাউড়া থেকে এক ঘন্টার যাত্রাপথে হিজড়াদের জন্য টাকা আলাদা করে রাখতে হয় যাত্রীদের। সর্বনিম্ন ১০ টাকা। তার কম দিলে অশালীন আচরণ শুরু করে হিজড়া চক্র। সঙ্গে ছোটো বাচ্চা বা নবজাতক থাকলে  গুণতে হয় দুই থেকে তিনগুণ টাকা । না দিলে নানা ধরনের অশোভন আচরণের পাশাপাশি হেনস্থা হতে হয় যাত্রীদের।

ঢাকা থেকে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে কুলাউড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে সাবেক সেনা কর্মকর্তা লুৎফুল হক এমন অসহ্য যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে একাধিকবার।

কুলাউড়া পৌছে তিনি জানান, বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার পর হিজড়াদের এক গ্রুপ এসে টাকা দাবি করে। ১০ টাকা দিয়ে ভাবলেন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া গেল। কিন্তু তিনি আদৌ মুক্তি পাননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার পর আরেক গ্রুপ। এবার বিরক্ত হয়ে দিলেন ১০ টাকা। কিন্তু ট্রেন শ্রীমঙ্গল ছাড়ার পর আরেক গ্রুপ। টাকা দিতে না চাইলে সবার সামনে তার গাল চেপে ধরে এক হিজড়া। এবার বাধ্য হয়ে দিতে হলো ১০ টাকা। কুলাউড়া স্টেশনে নেমে তিনি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন।

একই কথা জানালেন ট্রেনের অন্য যাত্রীরা।

তারা জানালেন, এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাবার উপায় নেই। ওরা চাঁদাবাজদের মতো যাত্রীদের টার্গেট করে টাকা চায়, না দিলে অশালীন আচরণের শিকার হতে হয়।

ট্রেন যাত্রী সিপার উদ্দিন আহমেদ জানান, যাত্রীরা টাকা দিতে বাধ্য। নয়তো হেনস্থা করে ফেলে। তিনি জানান, তার পাশে এক দম্পতি নবজাতক নিয়ে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গল ফিরছিলেন। তাদের কাছে হিজড়ারা ৫০০ টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি প্রথমে ৫০ টাকা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কোনো মতে অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় ১০০ টাকা দিয়ে রক্ষা পান।

শুধু পারাবত নয় সিলেট থেকে ঢাকা ও চট্রগ্রামগামী আন্ত:নগর সবকয়টি ট্রেনে এভাবে বেপরোয়া চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া। তাদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শুধু হিজড়া নয় আন্ত:নগর ট্রেনে হকারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা।

ট্রেন যাত্রীদের মতে, এসব হিজড়াদের উৎপাত ও চাঁদাবাজি থামাতে উদ্যোগ নিতে হবে রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী অর্থাৎ জিআরপি পুলিশের। এসব নিয়ন্ত্রণকারী রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী এদের আয়ের ভাগ পায়। ফলে তারা হকার কিংবা হিজড়াদের উল্টো নিরাপত্তায় বেশি ব্যস্ত থাকে। 

হিজড়াদের বিভিন্ন গ্রুপের কথা স্বীকার করে কুলাউড়া জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল মালেক জানান, এরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভিক্ত থাকে। ফলে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আইনগতভাবে এদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। হিজড়া বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads