• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯

অপরাধ

জজ মিয়ার আরেকটি সংস্করণ মিন্নি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী ও চার্জশিটভুক্ত ৭ নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এ মামলা হলো জজ মিয়া এবং জাহালমের আরেকটা সংস্করণ। চার্জশিটের কথা তো আগাগোড়াই বলেছি-এটা একটা মনগড়া উপন্যাস। মূলত মূল আসামিদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে এ ধরনের কারবার করা হয়েছে। নাথিং নিউ। গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্ট বারে আইনজীবী পান্নার চেম্বারে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মিন্নি। এ সময় তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাতে মিন্নি আইনজীবীর পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পান্না বলেন, ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। আদালতে মিন্নির দেওয়া জবানবন্দি প্রকাশের বিষয়ে বলেন, আমি কোর্টে বসেই সেটা দেখেছি। এর আগে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত যখন আমাদের জবানবন্দি দেখাতে দিতে বলেছিল তখন এক নজর দেখেছি। সেটাও (১৬৪ ধারার জবানবন্দি) একটা উপন্যাস।

সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি কোর্টকে বলেছেন, এটা এত সুন্দর করে লেখা যা চিন্তার বাইরে। সুস্থ মাথায় এত সুন্দরভাবে লেখতে পারে না। এটা প্রত্যাহারের আবেদন আগেই করা হয়েছে। মিন্নি নিজে জেলখানা থেকে করেছে। তবে বিষয় হচ্ছে, এই জবানবন্দি পুলিশের কাছে ছিল। আদালতের কাছে দেওয়ার আগে এটা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটা আদালত অবমাননা।

এদিকে মিন্নিকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি বলেন, পুলিশ রিমান্ডের নামে আমার মেয়ের মাথায় পিস্তল ধরেছে। নির্যাতন করেছে। ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এরপর থেকেই ও বিষণ্নতায় ভুগছে। তাই ওর চিকিৎসা প্রয়োজন, এ জন্যই ঢাকায় এসেছি। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে মিন্নির আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আইনি পরামর্শ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ তোলেন তিনি।

বলেন, রিমান্ডের নামে আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সে এখনো তার ভয়াবহতায় ভুগছে। তার হাঁটুতে ব্যথা, জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা। আমরা এখনো শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। সরাসরি কেউ কিছু না বললেও আকার-ইঙ্গিতে বুঝতে পারছি, আমাকে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করতে চায়। সব সময় আমাদের ফলো করে। আমি এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রভাবশালী একটি কুচক্রী মহলের কাছ থেকে মিন্নি রেহাই পেল না। যে কারণে সে আজ সাক্ষী থেকে আসামি। কত দিন ঢাকায় থাকবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘এটা বলা যাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য যত দিন লাগবে তত দিন থাকব।’

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এর মধ্যে অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকায় বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই দিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads