• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
শতাধিক আ.লীগ নেতার হিসাব অনুসন্ধানে দুদক

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতা

শতাধিক আ.লীগ নেতার হিসাব অনুসন্ধানে দুদক

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ক্যাসিনো-কাণ্ডের জের ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী ও তাদের স্বজনদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে দুজন সংসদ সদস্যের নাম। তাদের নাম না জানালেও, দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এক্ষেত্রে কোনো দল-মত দেখা হবে না।

ক্যাসিনোসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পরপরই সামনে আসে এর সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর নাম। এ অবস্থায় অভিযুক্তদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে দুদক। করণীয় ঠিক করতে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে সব উপ-পরিচালক, পরিচালক, মহাপরিচালক ও সচিবকে নিয়ে হয়েছে দুদকের বৈঠক। এ সময় দেওয়া হয় ভোলা ও কুমিল্লার দুই সংসদ সদস্য, একাধিক যুবলীগ নেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক নেতাকর্মীর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের দিকনির্দেশনা। তবে আওয়ামী লীগের বেশ কজন দুর্নীতিবাজ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানালেও, কোনো ব্যক্তি বিশেষের নাম বলতে রাজি হননি দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।

তিনি বলেন, ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে নাম আসেনি, এমন কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির তথ্য-প্রমাণও সংগ্রহ করছে দুদক। আদালতে উপস্থাপনযোগ্য তথ্য পেলেই নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির কথা বিবেচনায় রেখেই কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন দুদক কমিশনার।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সহযোগী ও যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ক্যাসিনো পরিচালনাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে যুবলীগের আরেক নেতা গণপূর্তের প্রভাবশালী ঠিকাদার জি কে শামীম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজসহ আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসলে আত্মগোপনে চলে যান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল এবং ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মতিঝিলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদ।

সূত্রমতে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা রকম অপকর্মের অভিযোগে যুবলীগে চলছে শুদ্ধি অভিযান। যে অভিযানের শুরুটা হয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণকে ঘিরেই। প্রথম দিনের অভিযানে সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন গডফাদার-খ্যাত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। তার বিরুদ্ধে রয়েছে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ। সম্রাটের বাসভবন বা কাকরাইলের সুরক্ষিত অফিসটিতে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযান চালানো হয়নি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে- তবে কি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবেন সম্রাট?

অভিযান শুরুর প্রথম দিনে গুঞ্জন ছিল- যেকোনো সময় সম্রাট গ্রেপ্তার হতে পারেন। এমন সংবাদের মধ্যেই সম্রাট নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাকরাইলের অফিসেই অবস্থান করেন রাতভর। এরপর থেকে আর তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। তবে গুঞ্জন রয়েছে, সম্রাটের অপরাধ সাম্রাজ্য থেকে মহানগর যুবলীগে প্রবেশের সহায়তাকারী এক সংসদ সদস্যের আশ্রয়ে আছেন তিনি। অভিযান শুরুর পরের দিনই কাকরাইল থেকে সটকে পড়ে আশ্রয় নেন ওই সংসদ সদস্যের ছায়াতলে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads