• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
চাকরির নামে ধর্ষণের অভিযোগ পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

চাকরির নামে ধর্ষণের অভিযোগ পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০১ অক্টোবর ২০১৯

চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক নারীকে ঢাকায় এনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে। ওই নারীর অভিযোগ, শুধু ধর্ষণই নয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন ওসি মাহমুদুল। একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন ওসি।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী।

গতকাল সোমবার সকালে গণমাধ্যমকে তিনি তার অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পুলিশ সদর দপ্তর ইতোমধ্যে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোনালিসা বেগম বলেন, সদর দপ্তর এখন ওসির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। পুলিশের আইজিপির কাছে দায়ের করা অভিযোগে ওই নারী বলেন, কলেজে পড়ালেখা করা অবস্থায় ওসি মাহমুদুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে ফোনে কথা হতো। এরই সূত্র ধরে গত দুই বছর আগে ওসি মাহমুদুল তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় ডেকে আনেন। তার কথামতো ওই নারী ঢাকায় এলে ওসি মাহমুদুল তাকে পল্টনের একটি আবাসিক হোটেলের রুমে নিয়ে যান।

ওই নারীর অভিযোগ, হোটেলে নিয়ে তাকে খাবারের সঙ্গে ‘কিছু মিশিয়ে’ তা খাইয়ে অচেতন করে ফেলেন ওসি মাহমুদুল। এরপর অচেতন অবস্থায় তার সঙ্গে শারীরিকভাবে মিলিত হন তিনি। পরে তার জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি বুঝতে পেরে মাহমুদুল হকের কাছে জানতে চান কেন তিনি এমনটা করলেন।

জবাবে ওসি ওই নারীকে জানান, তিনি তাকে ভালোবাসেন, বিয়ে করতে চান। তবে যেহেতু তিনি বিবাহিত, তার স্ত্রী রয়েছে তাই তার প্রস্তাবে ওই নারী রাজি হবেন না বলেই তিনি পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেন বলে স্বীকার করেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় জানিয়ে কোরআন শরিফে হাত রেখে ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন ওসি মাহমুদুল।

ওই নারীর করা অভিযোগে আরো বলা হয়, ওইদিনের পর ওসি মাহমুদুল একাধিকবার তার সঙ্গে ওই হোটেলেই শারীরিক সম্পর্ক করেন।

গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি মাহমুদুলকে জানান। এ সময় তিনি ওই নারীকে আবারো বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। পরে ওই নারী বারবার বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে ওসি মাহমুদুল একপর্যায়ে তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরে কোনো উপায় না পেয়ে ওই নারী ওসির অফিসে যান, এমনকি মাহমুদুলের বাবার কাছে গিয়েও বিষয়টি জানান। মাহমুদুলের বাবা প্রথমে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি মেনে নেন। পরে তিনি তাকে এবং তার পরিবারকে হুমকি দেওয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।

একপর্যায়ে গত ২০ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে এই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে তার অভিযোগে উল্লেখ করেন।

পরে গত মাসের ১ তারিখ আইজিপি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। ওসি মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি)।

পরে ওসি মাহমুদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেন মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোনালিসা বেগম। তদন্ত শেষে তিনি একটি প্রতিবেদন ডিএমপি সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মোনালিসা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে ওই নারীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্তটি আমি করেছি। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনটি ডিএমপির হেড কোয়ার্টারের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।’

অভিযুক্ত পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হককে একাধিকবার ফোন করার পরও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে ওই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিদুজ্জামান জানান, মাহমুদুল হক নিয়মিত অফিস করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads