• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ধরাছোঁয়ার বাইরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩২ যুদ্ধাপরাধী

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

ধরাছোঁয়ার বাইরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩২ যুদ্ধাপরাধী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৯

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৬৮ জন। এদের মধ্যে ফাঁসি হয়েছে ছয়জনের। বিভিন্ন সময় মারা গেছেন ১০ জন। আর পলাতক রয়েছেন ৩২ জন আসামি।

জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৪০টি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এসব মামলায় মোট আসামি ১০৪ জন। এদের মধ্যে ৯৪ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার পূর্বে কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা গেছেন আটজন। পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন দুজন। আর গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ৪৬ জন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি একজন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৬৮ জন। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ২৪ জন। সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা একজন। ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণা করা হয় জামায়াত নেতা আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের। রায়ে তাকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। তিনি পলাতক রয়েছেন। এই আসামির বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানায়। ২০১২ সালে এই আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর ফেনী জেলার দাগন ভূঁইয়া থানার মো. আশরাফুজ্জামান খান ওরফে নায়েব আলীর বিরুদ্ধে মামলায় ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। আরো এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তার নাম জানা যায়নি। আসামি এখনো পলাতক।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয় ফরিদপুরের এমডি জাহিদ হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে। ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় তার বাড়ি।

২০১৫ সালের ৯ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সৈয়দ মো. হাছান আলীর ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল-১। ২০১৬ সালের ৩ মে রায় ঘোষণা করা হয় কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার রাজাকার কমান্ডার গাজী মো. আবদুল মান্নান, নাছির উদ্দিন আহম্মেদ ওরফে মো. নাছির ওরফে ক্যাপ্টেন এটিএম নাছির ও মো. হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায়। ওই ৩ জনের সবাই পলাতক রয়েছেন।

২০১৬ সালের ১৮ জুলাই মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয় জামালপুরের আবদুল মান্নান, আশরাফ আলী ও আবদুল বারি। এসব আসামিও পলাতক রয়েছেন।

২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় শরীয়তপুর জেলার পালং থানার মো. ইদ্রিস আলী সরদারকে।

২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল-১-এ ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয় কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলি উপজেলার সৈয়দ মোহাম্মাদ হুসাইন ওরফে হোসেনের বিরুদ্ধে।

২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আবু সালেহ মুহাম্মাদ আবদুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ, মো. রুহুল আমীন, আবু মুসলিম মোহাম্মাদ আলী, মো. নাজমুল হুদা, মো. আবদুর রহিম মিয়ার বিরুদ্ধে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয় ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারী ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয় মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার মো. নেছার আলী ও মোবারক মিয়ার বিরুদ্ধে।

২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-১ নোয়াখালী জেলার সুধারামপুর থানার আবুল কালাম ওরফে মো. এ কে এম মনসুরকে ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করে।

২০১৮ সালের ১৩ জুলাই মৌলভীবাজারের আবদুন নুর তালুকদার, আবদুল মোছাব্বির মিয়াকে ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার মো. লিয়াকত আলী ও মো. আমিনুল ইসলামকে ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার শেখ আবদুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানা, মো. আবদুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আবদুস সালাম বেগ ও মো. নুর উদ্দিনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার হেদায়েত উল্লাহ আনজুকে ফাঁসির সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল-১।

২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর গাইবান্ধা জেলার মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল, মো. জাছিচার রহমান ওরফে খোকা, মো. আব্দুল ওয়াহেদ মণ্ডল, মো. মনতাজ আলী বেপারি ওরফে মমতাজকে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির সাজা দেয় ট্রাইব্যুনাল।

তবে এসব পলাতক আসামিকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানা গেছে। আসামিদের নাম-ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার থানার ওসি ও জেলা প্রশাসক বরাবর আদালতের আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে।

তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি বলেন, ‘এসব আসামিকে ধরতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও থানার ওসিদের রায়ের কপি সরবরাহ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে আরো জোরালো ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা মনে করি।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads