• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
কুমিল্লায় পরিবারকে আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে অর্থ দাবি, আত্মহত্যা কলেজছাত্রীর

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

অপরাধ

কুমিল্লায় পরিবারকে আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে অর্থ দাবি, আত্মহত্যা কলেজছাত্রীর

  • কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ জুন ২০২০

কুমিল্লার বরুড়ায় আপত্তিকর ছবি মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ দাবি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের হুমকিতে লজ্জায় বিষ পাণে আত্মহত্যা করেছে এক কলেজছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের সিংগুর গ্রামে। ভুক্তভোগি কলেজ ছাত্রী সিংগুর গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মিয়ার মেয়ে মারিয়া আক্তার গাজী (১৯)। সে চট্টগ্রাম ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

গোপন ক্যামরায় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি প্রকাশের হুমকিতে কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বরুড়া জুঁড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত সোমবার সকালে ওই কলেজ যাত্রী আত্মহত্যা করেন। এরপর তার পরিবার গত বৃহস্পতিবার বরুড়া থানায় একটি মামলা করেন।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্রী মারিয়া তাদের পার্শ্ববর্তী খলারপাড় গ্রামের জাবেদ মজুমদার নামে এক যুবকের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তাদের প্রেমটি গড়ে উঠে ২ বছর পূর্বে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকাকালে। জাবেদ মজুমদার খলারপাড় গ্রামের মোস্তফা মজুমদারের ছেলে। প্রেমের ঘটনাটি লোকমুখে জানা জানি হলে কলেজছাত্রী মারিয়ার পরিবার ওই যুবকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ছেলেকে সাবধান করার জন্য বলেন। এরপর সমাজের মুরব্বিদের নিয়ে দুই পরিবার একসাথে বসে সিদ্ধান্তে আসে সংশ্লিষ্ট পরিবার তাদের ছেলে-মেয়েকে সাবধান করবে যাতে একজন-অন্যজনের সাথে কোন যোগাযোগ না করতে পারে।

কিন্তু লম্পট যুবক পরিবারের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে প্রেমের সম্পর্ক পূণরায় গড়ে তুলতে ওই কলেজছাত্রীকে বিভিন্ন কায়দায় প্রস্তাব দেওয়া শুরু করে। মারিয়া অস্বীকৃতি জানালে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে। সম্পর্ক না রাখলে গোপন ক্যামরায় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে ফেসবুকে প্রকাশের হুমকি দেয়। এছাড়া বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে।

মা সাদিয়া আক্তার জানায়, আপত্তিকর ছবিগুলো মারিয়াকে পাঠানোর পর তার বাবার ফেসবুক মেসেঞ্জারেও পাঠায় ওই লম্পট যুবক। শুরু তাই নয় মারিয়ার বড় ভাই এবং আমাকেও ওই ছুবিগুলো পাটিয়ে বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার ধারণকৃত ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। এসব কথা আমার মেয়ে জানতে পেরে গত সোমবার (৮জুন) লজ্জায় বিষপান করে আত্মহত্যা করে।

তিনি বলেন, আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই প্রশাসনের কাছে। আমি বরুড়া থানায় লম্পট যুবক জাবেদ, তার বাবা মোস্তফা মজুমদার ও তিন ভাইসহ ৬জনকে আসামি করে মামলায় দায়ের করেছি। মেঞ্জারের জাবেদের হুমকি ও কথোপকথনের সব স্ক্রিনশট থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরুড়া থানার এস আই আনিছুর রহমান জানান, থানায় মামলা করার পর আমরা একাধিকবার ঘটনা তদন্ত করতে মাঠে গিয়েছি। আসামিদের আটক ও গ্রেফতার করতে কাজ করছি। তবে প্রধান আসামিসহ সবাই পালাতক রয়েছে। তারপরও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads